পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। এ জন্য দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাজশাহী থেকেও কোনও ট্রেন ছাড়েনি। এতে দুর্ভোগে পড়েন শত শত যাত্রী।
রেলের স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন না ছাড়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে যাত্রীরা রাজশাহী রেলস্টেশনে ভাঙচুর চালিয়েছেন। স্টেশনে যাত্রীদের বসার জন্য থাকা চেয়ারগুলো ভাঙচুর করেন। এ সময় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা স্টেশনের ভেতরের বিভিন্ন রুমের দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৬টা ২০ মিনিটে রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে চিলাহাটির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেন। তবে রেলের স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন না ছাড়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, এখনও অনলাইনে টিকিট বিক্রি করছে রেল কর্তৃপক্ষ। যদি ট্রেন বন্ধ থাকে তাহলে কেন টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। হঠাৎ করে আন্দোলনের ঘোষণা দেয়ায় অধিকাংশ যাত্রী জানতেন না সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। এ অবস্থায় যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রেল স্টেশনের চেয়ার ভাঙচুর করেন।
এ ছাড়া রেলের এক কর্মচারীকে মারধর করা হয়। পরে বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা রেলওয়ের দুজন স্টাফকে আটকে রাখেন এবং ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার দাবি তোলেন।
এ ছাড়াও রাজশাহী স্টেশন থেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে কোনও ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে না। চিলাহাটিগামী সকাল ৬টা ২০ মিনিটের তিতুমীর এক্সপ্রেস, সকাল ৬টা ৩০ মিনিটের খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, সকাল ৭টায় ঢাকাগামী বনলতা এক্সপেক্স এবং সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের ঢাকাগামী সিল্কসিটি ট্রেন ছেড়ে যায়নি। এসব ট্রেনের যাত্রীরা সকালে এসে ট্রেন বন্ধ দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে স্টেশনের চেয়ার ভাঙচুর করেন। পাশাপাশি দুজন স্টাফকে আটক করে মারধর করেন।
যাত্রীরা বলছেন, টিকিট বিক্রি করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ট্রেন বন্ধ রাখায় তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন। এরকম কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি জানান।
তিতুমীর এক্সপ্রেসের যাত্রী মোহাম্মদ আলী বলেন, ট্রেন পুরোপুরি বন্ধের বিষয়টি যাত্রীদের এসএমএসের মাধ্যমে অন্তত জানার দরকার ছিল কর্তৃপক্ষের। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তে অনেক যাত্রী সাত সকালে স্টেশনে এসে ফিরে গেছেন। ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জানায়নি। এটি দুঃখজনক ব্যাপার। আমাদের প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিষয়টি সমাধান করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন স্টেশন ম্যানেজার শহিদুল আলম বলেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ কারণে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু চেয়ার ভাঙচুর করেছেন। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। কাউন্টারে টিকিটের টাকা ফেরত দেয়া হবে। এ ছাড়া যারা অনলাইনে টিকিট কিনেছেন আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তারাও টাকা ফেরত পাবে। বর্তমানে স্টেশনের পরিবেশ শান্ত আছে।
রাজশাহী রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহীতে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। আমাদের অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।