জাতীয় নির্বাচনের কথা বললে এরশাদের মতো উপদেষ্টাদের চুলও দাঁড়িয়ে যায় মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে দেয়া হবে না। তারা দুর্বল সরকার।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, চুপচাপ সবাই, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে আওয়ামী লীগ, টাকা ফোরতে কোনো কমিটি করেননি, দূত পাঠাচ্ছেনা না। আদালত রায় দিলে বিদেশে গিয়ে টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের টাকা আনতে পারলে কয়েক বছরের বাজেট হবে। যারা খুন করেছে, তাদের বিচার করেন। আঁতেল মার্কা কথা বাদ দেন, প্রকলোমেশনের কথা বলেন। হাসিনা চলে যাওয়ার পর তো অর্ধেক সংস্কার হয়ে গেছে।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, সরকারের প্রধান কাজ হলো নির্বাচন দেয়া, জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে দেয়া হবে না এই সরকারকে। তারা দুর্বল সরকার।
বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, স্বৈরাচার এরশাদের চুল ছিল ছোট। চুল কাটতে গেলে নাপিতের খুব কষ্ট হত। তখন নাপিত এরশাদকে জিজ্ঞেস করতেন, স্যার, কবে নির্বাচন দেবেন? এই কথা শুনেই রাগে এরশাদের চুল খাড়া হয়ে যেত। আর এতে নাপিতের চুল কাটতে সুবিধা হত। এখন নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের ঠিক তেমনি চুল খাড়া হয়ে যায়!
উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে তাদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এখনই তাদের দায়িত্ব দেয়া ঠিক হয়নি। তাদের ওপরে কোনো একজন করে অভিভাবক দরকার ছিল। তাদের কথায় মনে হয় দেশটা মনে হয় নতুন করে স্বাধীন হলো। প্রকলোমেশন দেয়ার কথা বলছে, বহুত্ববাদের কথা বলছে।
নির্বাচন নিয়ে কথা বললে, উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায় মন্তব্য করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, কিংস পার্টি করবেন না, দ্রুত নির্বাচন দিন। বিএনপি এই বছরের মধ্যে নির্বাচন চায়। ২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন চায়। এক বছর প্রায় সময় পাবেন, যত খুশি দল গঠন করে নির্বাচনে আসেন, এর মধ্যে কোনো কুটক্যাচাল করবেন না, প্রতিবেশীদের সুযোগ তৈরি করে দেবেন না। দ্রুত নির্বাচন দেন, দেখেন জনগণের শক্তি। ঐক্য তৈরি করেন, বিভেদ তৈরি করবেন না’, যোগ করেন হাফিজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, প্রফেসর ইউনূস বললে মানায় বা সিনিয়র কেউ বললেও মানায়, কিন্তু নাতির বয়সী কেউ যদি মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের জবাব দেয় তাহলে কষ্ট লাগে। নির্বাচনের সময় আছে কিছুটা, জনগণের কাছে যান।
‘উপদেষ্টাদের কথায় মনে হয় নির্বাচন হলেই বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, সেটাতো বিএনপির দোষ না। বিএনপি গত ১৫ বছরে নির্যাতন সহ্য করে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। তাদের অবদান মনে রাখতে হবে’, যোগ করেন বিএনপির সিনিয়র এ নেতা।
তিনি আরও বলেন, নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন সমস্যা নেই। কিন্তু কাউকে ছোট করে তর্ক করবেন, সেটা ঠিক হবে না। বিএনপির ১৫ বছরের নির্যাতন ও অবদানকে কেউ অবমূল্যায়ন করবেন না। নির্বাচন দিতে হবে। যেখানে কোনো কিংস পার্টি থাকবে না। জনগণে ভোট দিতে চায়, আঁতেল মার্কা কথা বলবেন না।
‘ড. ইউনূসের গ্রহণযোগ্যতা আছে, যদিও তার কোনো সাফল্য দেখা যাচ্ছে না। তারপরও বিএনপি ড. ইউনূসকে সমর্থন করছে। দয়া করে নাবালকদের কথায় চলবেন না। সরকারের নিরপেক্ষতা জরুরি। কেননা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে হলে তাদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে। সরকারে বসে কেউ কিংস পার্টি করার চিন্তা করতে পারবেন না’, যোগ করেন হাফিজ উদ্দিন।
ভারতের পছন্দের মানুষের পতন হওয়ায় দেশটির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে মন্তব্য করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, সীমান্তে প্রতিদিন মানুষ হত্যা করছে। নীরবে সহ্য করছে দেশের মানুষ। প্রয়োজনে আবারও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে, অস্ত্র হাতে নেয়া হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তরুণদের আর্মি ট্রেনিং দেবো।