সুইজারল্যান্ডে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগদান শেষে দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকাল ৫টা ৭ মিনিটে সরকারপ্রধান ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বাণিজ্যিক ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে।
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়ে ফ্লাইটটি। সরকারপ্রধান ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইটটি দুবাই হয়ে শনিবার বিকালে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
চারদিনের সফরে মুহাম্মদ ইউনূস মোট ৪৭টি ইভেন্টে যোগ দেন। তিনি চার জন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান, মন্ত্রী পর্যায়ের চার জন প্রতিনিধি, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ১০ জন শীর্ষ কর্মকর্তা বা নির্বাহী, বৈশ্বিক শীর্ষস্থানীয় ১০ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম আয়োজিত ৯টি প্রোগ্রাম, ৮টি মিডিয়া এনগেজমেন্ট এবং আরও দুটি অন্য অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২১ জানুয়ারি ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বাসস লিখেছে, ২১ জানুয়ারি ডাভোসে পৌঁছানোর পর থেকে ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে দিনগুলো কাটিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সফরের প্রথম দিন তিনি সাতটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে বৈঠক করেন।
পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা, মিউনিখ সুরক্ষা সম্মেলনের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফ হিউসজেন, থাই প্রধানমন্ত্রী পায়োংটার্ন সিনাওয়াত্রা, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এবং ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সাথেও সাক্ষাৎ করেন ইউনূস।
সফরের দ্বিতীয় দিন প্রায় ১৪টি অনুষ্ঠান এবং অনেক পার্শ্ব ইভেন্টে যোগ দেন তিনি।
জার্মানির ফেডারেল চ্যান্সেলারির প্রধান এবং বিশেষ কার্যনির্বাহী মন্ত্রী উলফগ্যাং শ্মিট; বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ; থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়োংটার্ন সিনাওয়াত্রা; সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল পররাষ্ট্র বিভাগের ফেডারেল কাউন্সিলর ইগনাজিও ক্যাসিস; সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই সংস্কৃতি ও শিল্প কর্তৃপক্ষের চেয়ারপারসন শেখা লতিফা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম; জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস; কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি; জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রাক্তন মার্কিন বিশেষ দূত জন কেরি; প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার; এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ফোলকার টুর্কসহ অন্যদের সঙ্গে ডব্লিউইএফ-এ বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি সম্মেলনের সময় 'জলবায়ু ও প্রকৃতির অবস্থা' শীর্ষক একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তব্য দেন এবং ডাভোসের একটি হোটেলে সামাজিক উদ্যোক্তাদের জন্য শোয়াব ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
২৩ জানুয়ারি ইউনূস ১৪টি নির্ধারিত অনুষ্ঠান এবং অনেক পার্শ্ব কর্মসূচিতে যোগ দেন। তিনি মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেডের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট স্যার নিক ক্লেগ; সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক গ্লোবাল লজিস্টিকস প্রোভাইডার ডিপি ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম; অধিকার গোষ্ঠী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড; ডেনিশ শিপিং এবং লজিস্টিকস কোম্পানি এপি মোলার-মায়ার্স্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মারস্ক উগলা; এবং বিশ্বব্যাংকের অপারেশনস বিভাগের এমডি আনা বিজের্ডের সাথে বৈঠক করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ডব্লিউইএফ শীর্ষ সম্মেলনে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াব আয়োজিত একান্ত বৈঠকে যোগ দেন এবং বৈঠকের ফাঁকে ডাভোসের ক্লাইমেট হাবে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।
সফরের শেষ দিন শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা সাতটিরও বেশি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন বিনিয়োগকারী রে ডালিও, মারিনো ম্যানেজমেন্ট এবং ডালিও ফ্যামিলি অফিসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এছাড়া জেনেল গ্রুপের (রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল কোম্পানি) নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আমের আলীরেজা দেখা করেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে।