Published : Friday, 24 January, 2025 at 12:10 AM, Update: 24.01.2025 1:41:49 AM
সীমান্ত হত্যা বন্ধে দফায় দফায় দু’দেশের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রতিশ্রুতি দিলেও কথা রাখেনি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গত ১৫ বছরে কেবল যশোরের শার্শা-বেনাপোল সীমান্তেই বিএসএফের হাতে নির্মমভাবে ৪১ বাংলাদেশি হত্যার শিকার হয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন আরও শতাধিক মানুষ। শুধু সাধারণ অনুপ্রবেশকারীরা নন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যও রক্ষা পায়নি বাহিনীটির নির্মমতার হাত থেকে।
গত বছরের ২২ জানুয়ারি বেনাপোল সীমান্তের আলোচিত হত্যার ঘটনা ছিল বিজিবি সৈনিক রহিসউদ্দীন হত্যাকাণ্ড। সবশেষ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বেনাপোলের পুটখালী সীমান্তে একই দিনে তিন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে নির্যাতনের পর হাত,পায়ের শিরা কেটে হত্যা করে বিএসএফ।
মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এসব হত্যাকাণ্ডের আজ পর্যন্ত একটিরও বিচার হয়নি ৷ নিহতের পরিবারের সদস্যরা অনেকেই উপার্জনক্ষম মানুষদের হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ‘মাথা উঁচু করে সীমান্ত হত্যার কড়া জবাব দিতে না পারলে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
গত ১৫ বছরে সীমান্তে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড সহ বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল সীমান্ত পথে গবাদিপশু পাচার, আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা বা কাজের খোঁজে দুই দেশের মানুষ সীমান্ত পারাপার করে থাকে। এছাড়াও সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে কৃষিকাজ কিংবা মৎস্য আহরণের জন্যও অনেক মানুষকে সীমান্তের নিকট দিয়ে পথ অতিক্রম করে থাকেন।
সীমান্তে চোরাচালান ও বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধের কারণ দেখিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিতর্কিত শ্যূট-অন-সাইট (দেখামাত্র গুলি) নীতি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বহাল রেখেছে। এতে বিএসএফ কারণে অকারণে গুলি করে আসছে। তবে এখন গুলির পরিমাণ কমলেও নির্যাতন চালিয়ে হাত পায়ের শিরা কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনা বেশি ঘটছে।
তবে তাদের এ আক্রোশের শিকার কেবল বাংলাদেশি নাগরিকরাই । এসব হতাহতদের একটি বড় অংশ হল গবাদি পশু ব্যবসায়ী। গত ১৫ বছরে শার্শা-বেনাপোল সীমান্তেই ৪১ বাংলাদেশি হত্যার শিকার হয়েছেন। নিহত গরু ব্যবসায়ীদের পরিচয় পাওয়া গেলেও দূরদূরান্ত থেকে আসা সীমান্ত পারাপারকারী অনেক নিহত মানুষের পরিচয় মেলেনা। পরে স্থানীয়রা খোঁজখবর পেলেও মামলার ভয়ে তথ্য গোপন রাখে।