নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নে কবির হোসেন প্রকাশ (৩৫) নামে এক যুবককে পায়ে গুলি করে ও গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জুমার নামাজের পর আলাইয়াপুর ইউনিয়নের সুজায়েতপুর গ্রামের সুজায়েতপুর জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কবির হোসেন একই ইউনিয়নের আকবর হাজী বাড়ির মৃত নুর নবীর ছেলে। নিহত কবিরের বড় ভাই আলমগীরকেও প্রায় আট বছর আগে একই কায়দায় হত্যা করেছিল সন্ত্রাসীরা।
স্থানীয়রা জানান, নিহত কবির হোসেন যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। যুবদলের রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় বিগত সরকারের আমলে একাধিক মামলার আসামি ছিলেন। তিনি একাধিকবার কারাগারেও গেছেন। গত ৫ আগস্টের পর এলাকায় আসেন।
শুক্রবার দুপুরে তিনি বাড়ির পাশের সুজায়েতপুর পূর্ব জামে মসজিদের জুমার নামাজ পড়তে যান। জুমার নামাজ আদায় করেই তিনি মসজিদ থেকে বাড়ির উদ্দেশে বের হয়ে যান। ওই সময় মুখোশ পরা ৫-৬ জন দুর্বৃত্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে সুজায়েতপুর পূর্ব জামে মসজিদের সামনে আসেন। একপর্যায়ে কবির মসজিদ থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে লক্ষ্য করে তারা গুলি ছোড়েন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তার পায়ের রগ ও গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি, নিহত কবির হোসেন ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার বড় ভাই আলমগীরকে আট বছর আগে সন্ত্রাসীরা হত্যা করার পর কবির নিজেই একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন। তার বড় ভাই আলমগীর চন্দ্রগঞ্জের বাশার মেম্বারের নেতৃত্বে পরিচালিত বাশার গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাশার মেম্বার প্রায় ৪-৫ বছর আগে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ র্যাবের গুলিতে নিহত হন। কবির হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় হাজী টোলার একটি গ্রুপের সঙ্গে ৫ আগস্টের পর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। আবার তার ভাই আলমগীরের হত্যাকারীরা ও বিভিন্ন সময় তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।
বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাস নিহত কবির হোসেন যুবদলের সঙ্গে যুক্ত বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কে বা কারা এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা প্রশাসনের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।
বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম আজম সুলতান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়েই আমাদের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে। বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করবো।