Published : Saturday, 21 December, 2024 at 5:20 PM
আফগান সীমান্তের কাছে পাকিস্তানের একটি সেনা চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। এতে অন্তত ১৬ জন সেনা নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাতে এ খবর জানিয়েছে এএফপি।
পাকিস্তানি তালেবান ভয়াবহ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। আফগান সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মাকেন এলাকায় একটি সেনা চৌকিতে শুক্রবার রাতভর অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে তারা।
প্রতিবেদন মতে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, মধ্যরাতে সেনা চৌকি ঘেরাও করে হামলা শুরু হয়। যা প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে। ৩০ জনের মতো একটি সশস্ত্র দল তিন দিক থেকে আক্রমণ করে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সন্ত্রাসীরা চেকপয়েন্টের ওয়্যারলেস যোগাযোগের সরঞ্জাম, নথিপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্রে আগুন লাগিয়ে দেয়।
পাকিস্তানি তালেবান হামলার দায় স্বীকার করে বলেছে যে, ‘আমাদের সিনিয়র কমান্ডারদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।’
গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, হামলার পর সেনা চৌকি থেকে একাধিক মেশিনগান ও একটি নাইট ভিশন ডিভাইসসহ সামরিক সরঞ্জামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহেই খাইবার পাখতুনখোয়ার শাংলা জেলার চাকেসার এলাকায় একটি নিরাপত্তা চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে অন্তত দুই নিরাপত্তা কর্মী নিহত এবং আরও তিনজন আহত হন।
এ ঘটনায় এখনও কোনো বিবৃতি দেয়নি পাকিস্তান সেনাবাহিনী। আফগানিস্তানে ২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংসতা বেড়েছে।
ইসলামাবাদভিত্তিক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্য মতে, গত বছর হতাহতের সংখ্যা ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছায়। বেসামরিক নাগরিক, নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্ত্রাসী মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার জন নিহত হয়।
চলতি বছরও সন্ত্রাসী হামলার সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে বছরের শেষের দিকে হামলার পাশাপাশি হতাহতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ডন জানিয়েছে, নভেম্বর মাসে পাকিস্তানজুড়ে ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলা ও সংঘর্ষে ৬৮ জন নিরাপত্তা কর্মীসহ কমপক্ষে ২৪৫ জন নিহত হয়েছে।
সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতের দিক থেকে নভেম্বর ছিল দ্বিতীয় ভয়াবহ মাস। আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছে। ৯২ জন বেসামরিক নাগরিক, ১০৮ জন সন্ত্রাসী ও ৫৪ জন নিরাপত্তা কর্মীসহ এই মাসে মোট ২৫৪ জন নিহত হয়।