ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ ও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরির জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছরের জানুয়ারির শেষে কিংবা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হতে পারে ডাকসু নির্বাচন।
রোববার (০৮ ডিসেম্বর) বিকালে প্রক্টর অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছে বলেও জানান প্রক্টর।
এর ফলে ৪ বছর অচল থাকার পর ২০২৫ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সচল হচ্ছে ডাকসু। এর আগে দীর্ঘ ২৮ বছর অচল থাকার পর ২০১৯ সালের মার্চে নির্বাচনের মাধ্যমে সচল হয় ডাকসু। এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। এরপর করোনা এবং প্রশাসনের অনীহার কারণে ৪ বছর ধরে বন্ধ ছিল ডাকসুর দুয়ার।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, ডাকসু নির্বাচন আমাদের জন্য খুবই জরুরি। কারণ শিক্ষার্থীদের মতামত আমাদের জানতে বেশ বেগ পেতে হয়। ডাকসু নির্বাচন হলে এই প্রক্রিয়াটি আমাদের জন্য আরও সহজ হবে। তবে এখানে বেশ কিছু সমস্যা আছে। ডাকসুর রিফর্মেশন প্রয়োজন আছে। গঠনতন্ত্র নিয়ে বেশ কিছু আপত্তি জানিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলো।
তিনি বলেন, ডাকসুর সভাপতি হিসেবে উপাচার্যের থাকা না থাকা নিয়েও কথা উঠেছে। স্লোগান দেয়া যাবে না, পোস্টার লাগানো যাবে না ইত্যাদি বিভিন্ন রকম কথাবার্তা এসেছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও। তবে সব প্রতিবন্ধকতা ছাড়িয়ে আমরা জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে ডাকসু নির্বাচন করতে চাই।
এদিকে গত ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে ডাকসু ফের চালুর দাবি জানানো হয়। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে।
সর্বশেষ গত বুধবার ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিময় সভায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছান নেতারা। এতে ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষে কিংবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সারা দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনে ঐক্যে পৌঁছেছে বলে ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।
ছাত্রসংসদ নির্বাচনের কথা জানিয়ে এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আজকের সভায় আমরা একমত হয়েছি, জানুয়ারি অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ডাকসুসহ সারা দেশে ছাত্র সংসদ শুরু হয়ে যাক। কারণ মার্চ মাসে রোজা।
তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্ররাজনীতির প্রকৃতি কেমন হবে তা নিয়েও কাজ করছে এ কমিটি। কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বসে তাদের পরামর্শ ও দাবি শুনছেন। সে আলোকে আগামী ১০ ডিসেম্বর ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করবেন এই কমিটি।