বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের “জাতীয় কবি” হিসেবে ভূষিত করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বাংলাদেশে কাজী নজরুল ইসলামকে সবাই “জাতীয় কবি” বললেও তার কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এতোদিন দেয়া হয়নি। কেবল কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আইনে জাতীয় কবি হিসেবে কাজী নজরুল ইসলামের নাম লেখা আছে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কবি কাজী নজরুল ইসলামকে “জাতীয় কবি” হিসেবে ভূষিত করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাবটি এনেছে। তবে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে কাজী নজরুল ইসলামের নাম সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়নি উপদেষ্টা পরিষদ।
এ বিষয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব মো. আতাউর রহমান জানান, সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবটি অনুমোদন হয়নি। কারণ সংবিধান সংশোধন করতে হলে সংসদ লাগে। এখন তো সে অবস্থা নেই। যখন সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি আসবে তখন এটি সেখানে অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, প্রেম ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী নজরুল ছেলেবেলায় পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন “দুখু মিয়া” নামে।
পিতৃহীন কবি একে একে হারিয়েছেন কাছের স্বজনদের। আর্থিক অসচ্ছলতা তার জীবনকে কঠিন করে তুলেছিল। সব বাধা অতিক্রম করে একসময় তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন। সাম্য ও মানবতার চেতনায় সমৃদ্ধ ছিল তার লেখনী। কবিতায় বিদ্রোহী সুরের জন্য হয়ে ওঠেন “বিদ্রোহী কবি”।
১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ই ভাদ্র (১৯৭৬ সালের ২৯ অগাস্ট) ঢাকায় মারা যান কবি নজরুল। রেওয়াজ অনুযায়ী বাংলা পঞ্জিকার তারিখ মেনে তার জন্মদিন ও মৃত্যুদিন পালন করে বাংলাদেশ।