Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ রোগী খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কলকাতার হাসপাতাল ■ খুবি শিক্ষার্থীদের মারধর, ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া ■ তারা মনে করছে ঠান্ডা হয়ে গেছি, আমি ঠান্ডা হই নাই ■ নির্বাচনী রোডম্যাপ পেলে কেউ ষড়যন্ত্রের সাহস পাবে না ■ দেশ, সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বের প্রশ্নে আমরা সবাই এক ■ দু-এক দিনের মধ্যে সুখবর আসছে ■ সংলাপে যেসব বিষয়ে কথা হয়েছে, জানালেন আসিফ নজরুল
১৩৪ কোটি টাকা কার, জানালে মুন্নী সাহা
Published : Wednesday, 4 December, 2024 at 10:02 PM

 সংবাদকর্মী মুন্নী সাহা

সংবাদকর্মী মুন্নী সাহা

এক ব্যাংক হিসাবে ১৩৪ কোটি টাকা লেনদেনের খবরে সংবাদের শিরোনাম হয়ে উঠেছেন সংবাদকর্মী মুন্নী সাহা। কোনও প্রতিবেদনের শিরোনাম- ‘মুন্নী সাহা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক একাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা জমা’। কোনোটির শিরোনাম- ‘মুন্নী সাহা সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে বেতনের বাইরে জমা হয় ১৩৪ কোটি’। কোনোটির শিরোনাম আবার সরাসরি- ‘মুন্নী সাহার একাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা’।

বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবখানেই টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে বিষয়টি। চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। 

অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন সাংবাদিক মুন্নী সাহা। জানালেন এই টাকা কার, তার সঙ্গেই বা এই টাকার সম্পর্ক কি। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই বিষয়ে বিশাল একটি স্ট্যাটাস দেন এই সাংবাদিক। 

মুন্নী সাহা তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‌‘আজ দেশের অনেকগুলো নিউজ পোর্টাল এবং দৈনিকে আমার একাউন্টে কত টাকা তা নিয়ে কিছু মিসলিডিং হেডলাইন দেখে বিস্মিত হয়েছি। 

অনেকেই  আমার একাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা- এমন ফটোকার্ড বানিয়ে ক্লিক নিচ্ছেন।  'মুন্নী সাহার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট একাউন্ট' বলে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে যাতে জনমনে ধারনা হচ্ছে এই একাউন্টগুলো আমার। কোন একাউন্টের নমিনি হলে সেটি 'স্বার্থ সংশ্লিষ্ট একাউন্ট' বলে এক ধরনের ধোয়াশা তৈরি করা যায়, কিন্তু সেই একাউন্টগুলো যে আমার নয়, সেটি কৌশলে এড়িয়েও যাওয়া যায়।

প্রথমত, কবির হোসেন তাপস দেশের একজন পুরোনো ব্যবসায়ী। বিগত সুদীর্ঘ ২২ বছর ধরে তিনি বিজ্ঞাপন ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সহ বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত। ওয়ান ব্যাংকের যে একাউন্টটির কথা বলা হয়েছে, আমি সেই একাউন্টের একজন নমিনি মাত্র; একাউন্টের লেনদেনের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। কবির হোসেন তাপসের কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আমি অংশীদার নই, কোন একাউন্টের গ্যারান্টারও নই। একাউন্ট ওপেন করার সময় পরিবারের কাউকে নমিনি হিসেবে দিতে হয় বলে এই একাউন্টে আমার নাম দেয়া আছে মাত্র। 

আলোচিত একাউন্টটি ২০১৭ তে  খোলা হয়েছে এবং বিগত ৭ বছরে এই একাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা 'লেনদেন' হয়েছে। 'লেনদেন' এর মানে আমার বন্ধুরা নিশ্চয়ই বুঝেন, এর মানে হচ্ছে প্রতিটি কার্যাদেশের বিপরীতে সব টাকা এখানে জমা হয় এবং সেই টাকা থেকে বিভিন্ন সাপ্লায়ার, ভেন্ডর, সরকারি কর ও ভ্যাট, কর্মচারিদের বেতন ও অন্যান্য অপারেটিং খরচ পরিশোধ করা হয়। এই হিসাবে ৭ বছরে এই একাউন্টে মোট ১৩৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গড়ে মাসে ৬৫ লাখ টাকার মতো। একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে মাসে ৬৫ লাখ টাকার ব্যবসা করা অস্বাভাবিক নয়, এবং সেই টাকার বড় অংশই টাকা বিভিন্ন সাপ্লায়ার, ভেন্ডর, অফিস খরচ, কর্মচারিদের বেতন-ভাতা, ভ্যাট ও কর হিসেবে খরচ হয়, যাকে এখানে 'লেনদেন' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু খবরে এমনভাবে বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে যাতে মনে হয় ১৩৪ কোটি টাকা একই সাথে এখানে জমা ছিল, যা সত্যের অপলাপ। 

কোনো কোনো রিপোর্টে কৌশলে লিখেছে যে,  ৫ আগস্টের আগে ১২০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। সেটাও যে লেনদেন, মানে ২২ বছরের বেতন বিল, ভাড়া, খরচ সবকিছু বাবদ; ২২ বছরের প্রতি মাসে মাসে হিসেবে তোলা সেটা এড়িয়ে,  শুধুমাত্র ভুল বার্তা দেয়ার জন্য করা হয়েছে; সেটা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেছি। 

উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আমি যতদূর জানি, কবির হোসেন তাপসের প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ব্যাংক ঋণগুলো নিয়মিত আছে।  আলোচ্য ব্যাংকটি একটি প্রাইভেট ব্যাংক যারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে বিভিন্ন সময়ে এই ব্যাংক ঋনগুলোর মেয়াদ ও কিস্তি সমন্বয় করে থাকে, যেটি খুবই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। কবির হোসেন তাপসের কোন খেলাপি ঋণ নেই এবং বর্তমান ঋণগুলোও খেলাপি হওয়ার আশু কোন সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না।
বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টিলেজেন্স ইউনিট যে কারোরই হিসাব চাইতে পারেন। সেই তালিকায় সাংবাদিক হিসেবে অনেকের সাথে আমার নাম ছিলো। এবং কর্তৃপক্ষ দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে অনুসন্ধান করেছে বলে আমার বিশ্বাস। 

একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মনে করি, বাংলাদেশের যে কোনো ব্যবসায়ীর দীর্ঘ ২২ বছরের ব্যবসায়,   মোট লেনদেন ১৩৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয় ১৪ কোটি টাকা, কোনো গুরুত্ব বহন করে না। 

দূর্ভাগ্য হচ্ছে, শুধুশুধুমাত্র আমার নামটি নমিনিতে ব্যবহার করায় একজন ব্যবসায়ী সামাজিক হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছেন, এখনও তার লেনদেন ব্যাহত হচ্ছে। 

আমি ঘটনাটিকে বা আমাকে নিয়ে যা যা ঘটছে, তা blessings in disguised হিসেবে গ্রহণ করছি। 

যদিও আমাকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে ট্যাগ দিয়ে মামলা দেয়া হয়েছে, গত ১৪/১৫ বছর ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তার পুরোটাই যে ভুল, তা অন্ততঃ এ ধরনের ইনভেস্টিগেশনে প্রমাণিত হলো। 

বিগত ফ্যদিবাদী সরকারের দোসর হিসেবে ট্যাগ দিলেও গত ১০ বছর আমি এবং আমার মত আরো দুয়েকজন সেলিব্রিটি সাংবাদিক সরকারি অনুষ্ঠান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস কনফারেন্স কাভার করার তালিকায় নিষিদ্ধ ছিলাম। 'এক টাকার খবর' নামের অনলাইনের অনুমতিপত্রও সাবেক তথ্যমন্ত্রী দেন নাই। 

সাংবাদিক হিসেবে কোনো সরকারি পদপদবী সুযোগও আমাকে নিতে হয়নি বলে আমি গর্বিত। 

প্রধানমন্ত্রীর ইন্টারভিউ বা সালমান এফ রহমানের মুখের ওপর কড়া প্রশ্ন করায় নানান সময় আমাকে যে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে, সেটা আমি সাংবাদিকতার শক্তিই মনে করি। 

সাহা পরিবারে জন্ম বলে আমাকে ভারতের দালাল বলতে মুখিয়ে থাকা মানুষগুলো অন্ততঃ এই সরকারের স্বচ্ছ অনুসন্ধান থেকে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কতোটা অন্ধত্ব নিয়ে আমার ওপর অবিচার  করা হয়েছে!  যেটা গত ১৫/১৬ বছর ধরেই আমাকে সহ্য করতে হয়েছে। 

বিগত সরকারের সময় আমি বারবার এসব মিথ্যাচারের ব্যাপারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যারাসমেন্টের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেও ফল পাইনি। বরং এই সরকারের স্বচ্ছতার প্রক্রিয়ায় বিষয়গুলো তদন্ত হওয়াতে আমি ব্যক্তিগত ভাবে স্বস্তি বোধ করছি, কিন্তু আমার সহকর্মীদের কেউ কেউ যেভাবে তথ্যগুলোকে টুইস্ট করে ফায়দা নিতে চাচ্ছেন, তা দূর্ভাগ্যজনক। 

রিপোর্টে, আমার সাথে জড়িয়ে  কবীর হোসেন তাপসের একাউন্টে ১৪ কোটি টাকার স্থিতির খবর যারা দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। 

যারা ভুল ফটোকার্ড করে, 'মুন্নী সাহার এ্যাকাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকা' লিখলেন, তাদের প্রতি দোয়া রইলো। যেন তারা বিভ্রান্তিমুলক হেডলাইন সাংবাদিকতা থেকে নিয়মের সাংবাদিকতা সম্মানের সাথে চর্চা করতে পারেন।

দেশ সংবাদ/এসএইচ


আপনার মতামত দিন
১৩৪ কোটি টাকা কার, জানালে মুন্নী সাহা
দেশ সংবাদ ডেস্ক
Wednesday, 4 December, 2024
রূপগঞ্জে সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা-গুলি
নিজস্ব প্রতিবেদক
Monday, 2 December, 2024
সাংবাদিক মুন্নী সাহা গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
Saturday, 30 November, 2024
ডিআরইউ'র নতুন সভাপতি সালেহ, সম্পাদক সোহেল
নিজস্ব প্রতিবেদক
Saturday, 30 November, 2024
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ভোটগ্রহণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
Saturday, 30 November, 2024
১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক
Sunday, 24 November, 2024
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক
এফ. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up