ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের মুখে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তবে দীর্ঘ প্রায় চার মাস পার হলেও দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে আওয়ামী লীগের দোসররা।
এমনকি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্বিচারে ছাত্র হত্যায় নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগের নেতারাও রয়েছে বহাল তবিয়তে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তাদের মাঝে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম জেসিআই বাংলাদেশ।
গেল ২৩ নভেম্বর এই সংগঠনটির কর্মকর্তারা ড. ইউনুস সরকারকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বরাবর সেই চিঠিটি দেয়া হয়। চিঠিতে তারা স্বৈরাচারের দোসরদেরকে দ্রুত অপসারণের দাবি করেছেন। এতো দিনেও ফ্যাসিবাদের দোসরদের উচ্চ পদে টিকে থাকাটা দু:খজনক বলে উল্লেখ করেন তারা।
সেই খোলা চিঠিতে আরও জানা যায়, অবৈধভাবে জেসিআই এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যন করা হয় নিয়াজ মোরশেদ এলিটকে। যিনি এখনো যুব লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। একই সাথে তিনি নগদেরও ইডি। জুলাই হত্যাকাণ্ড মামলার আসামীও তিনি। ছাত্র হত্যায় সমর্থন ও অর্থ দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গাজিপুরে মামলা হয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে কাজ করা জেসিআই সদস্যদের এই সংগঠন থেকে বের করে দেন এলিট। এই সংগঠনের বাকি ট্রাস্টিরাও আওয়ামী লীগের দোসর। যারা এখনো স্বপদে বহাল আছেন।
জেসিআই একটি আন্তর্জাতিক মানের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অর্গানাইজেশন। বিশ্ব জুড়ে ১২৭ টি দেশে এই সংগঠনের শাখা আছে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এর ট্রাস্টি বোর্ড নেই। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিজেদের হাত শক্ত করতে এই সংগঠনটিকে অঙ্গ সংগঠনে পরিণত করে। অন্য দেশে এই সংগঠনের ট্রাস্টি বোর্ড না থাকলেও শেখ হাসিনার নির্দেশে এ দেশে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়।
এই সংগঠনের ট্রেজারার জিয়াউল হক। তিনি একই সাথে সংগঠনটির নির্বাচন কমিশনারও। আওয়ামী লীগের সময়কার সুবিধা ভোগীদের একজন তিনি। ট্রাস্টি বোর্ড কোন ইলেকশন দেয়না। গত ৪ বছর ধরে সিলেকশন করে চালাচ্ছে।
জেসিআই এর বর্তমান সভাপতি ইমরান কাদের। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা। ইমরান কাদের জেসিআই এর কোন সদস্যকে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে দেননি।
জেসিআই’র সদস্যদের চাঁদা থেকে প্রতিবছর আসে দেড় কোটি টাকা। এই আয়ের কোন হিসেব দেয়না বোর্ড। এছাড়াও সারা বছর ইভেন্ট থাকে ৭-৮ টা। যেগুলো স্পন্সর থাকে বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা। সেখান থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করে জেসিআই। সে সবেরও কোন হিসেব দেয়না বোর্ড।