জয়ের পথটা আগেই তৈরি করে দিয়েছিলেন বোলাররা। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই রাখেন তারা। এরপর শারমিন আক্তার সুপ্তা ও ফারজানা হকের দুর্দান্ত ব্যাটিং। তাতে জয় তুলে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে। আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়ল বাঘিনীরা।
সোমবার (০২ ডিসেম্বর) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে ১৮৫ রানে অলআউট হয়ে যায় আইরিশরা। জবাবে ৩৭.৩ ওভারে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
এর আগে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে কোনো দলকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজে অবশ্য পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ রেকর্ড রয়েছে তাদের। তবে দেশের বাইরে ২০২১ সালে জিম্বাবুয়েকে তদের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাঘিনীরা।
এবার এক বছরেরও বেশি সময় পর ফিরে প্রথম ওয়ানডেতে আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন সুপ্তা। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটা পেয়েও পাননি। মিস করেছিলেন চার রানের জন্য। এদিন যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে মনে হয়েছিল প্রথম দিনের আক্ষেপ ঘোচাতে পারবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত ৭২ রানে বিদায় নেন এই ওপেনার। ৮৮ বলের ইনিংসে ১১টি চার মারেন তিনি।
লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ৯ রানেই ওপেনার মুর্শিদা খাতুনকে হারায় তারা। তবে ফারজানার সঙ্গে সুপ্তার ১৪৩ রানের জুটিই জয়ের ভিত গড়ে দেয়। যা মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। এর আগে ২০১৭ সালে রুমানা আহমেদ ও শারমিন সুপ্তা গড়া ১২৭ রানের জুটি ছিল সর্বোচ্চ।
দলীয় ১৫২ রানে সুপ্তাকে বিদায় করে এ জুটি ভাঙেন অ্যামি মাগুয়েইর। এরপর দ্রুত ফিরে যান ফারজানাও। তাকেও ফেরান মাগুয়েইর। আউট হওয়ার আগে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৯৯ বলের ইনিংসটি সাজান ৬টি চারের সাহায্যে। দুই সেট ব্যাটারকে হারালে বাকি কাজ সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে শেষ করেন জ্যোতি।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৯ রানে ওপেনার সারাহ ফোর্বসকে তুলে নেন সুলতানা খাতুন। এরপর এমি হান্টারকে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। হান্টারকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন রাবেয়া খান। ২৩ রান আসে হান্টারের ব্যাট থেকে।
এমির বিদায়ের পর ওরলা প্রেডারগাস্টকে নিয়ে ছুটেন গ্যাবি। তবে তাদের গতি ছিলো অতি মন্থর। ২৯তম ওভারে ব্যক্তিগত ৫২ রানে ফাহিমা খাতুনের বলে গ্যাবির বিদায়ে ৪০ রানের এই জুটি যখন ভাঙে স্কোরবোর্ডে তখন কেবল ৯৭ রান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রান করতে লেগেছে তার ৭৯ বল। ওরলা করেন ২৭ রান।
এরপর তাদের একাধিক ব্যাটার থিতু হলেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি, এক পর্যায়ে রানরেট বাড়ানোর চাপে ঝুঁকি নিতে গিয়ে একে একে ফিরে যান তারা। আরলিন কেলি (১৮), এলানা ডালজেল (১৯) ও কারা সার্জেন্ট (১৩) সেট হলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সাফল্য পেয়েছেন কম বেশি সবাই। ১০ ওভারে ৪৩ রানের খরচায় ৩ উইকেট নিয়ে তাদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ফাহিমা। সুলতানা ও নাহিদার শিকার দুটি করে।