Published : Wednesday, 27 November, 2024 at 10:35 PM
বিভিন্ন স্থানে সংঘাত, হানাহানিসহ দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগ জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বিভাজনের পথ এড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির কথা বলেছে।
বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতে, বিশেষ করে কয়েক দিন ধরে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ছাত্রদের সমস্যা—এগুলো নিয়ে দলের পক্ষ থেকে আমরা উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। এসব বিষয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছি। সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়ার কথাও বলেছি। আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা তার পরিষদ নিয়ে অতি দ্রুত উদ্ভূত পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেখা করে। তারা প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন ‘ইসকন’ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ ওঠে। তাঁকে গ্রেপ্তারের কারণও তাঁরা জানতে চান। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দল ও সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করার যে দাবি তুলেছে, এর সঙ্গে বিএনপি দ্বিমত জানিয়েছে; বরং তারা ইসকনকে আলোচনায় ডেকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারকে। বিশেষ করে দুটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ, বিভাজন সৃষ্টি ও বিদ্বেষ ছড়ানোর বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলেছে বিএনপি।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে বের হয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দেশে যেন কোনো রকম অবস্থার সৃষ্টি না হয়, যার মধ্য দিয়ে বিভাজন সৃষ্টি হয়। এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। কারণ, আমাদের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য, বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায় অথবা এর স্থিতিশীলতা যারা বিনষ্ট করতে চায়, তাদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
এ ছাড়া জনগণের যে দুর্ভোগের কারণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, টিসিবির এলাকা ও ট্রাক বাড়ানো, সড়কে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করা, কৃষকের সার বিতরণে ফ্যাসিস্টদের দোসরদের বাদ দেওয়া, শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের বেতন নির্বিঘ্ন করা, ইউনিয়ন পরিষদগুলো ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান বিএনপির মহাসচিব। একই সঙ্গে তাঁরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে করা রাজনৈতিক মামলাগুলো প্রত্যাহারে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত হয়। এরই অংশ হিসেবে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও সালাহ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সরকারের তিন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান ও মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।