নারী ও মেয়েদের জন্য নিজ বাড়ি অনিরাপদ রয়ে গেছে। বিশ্বে ২০২৩ সালে প্রতিদিন গড়ে ১৪০ জন নারী ও কিশোরীকে হত্যা করা হয়েছে। ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, প্রিয়জন, নিকটাত্মীয় বা পরিবারের সদস্যদের হাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতিসংঘের দুটি সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য, গত বছর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও স্বজনদের হাতে খুন হওয়া নারী ও মেয়েদের বৈশ্বিক সংখ্যা ৫১ হাজার ১০০। এই সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। বিশ্বজুড়ে ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৮ হাজার ৮০০।
ইউএন ওমেন এবং জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত দপ্তর তাদের এক প্রতিবেদনে সঙ্গী ও স্বজনদের হাতে নারী ও মেয়েদের খুন হওয়া বেড়ে যাওয়ার এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, লৈঙ্গিক সহিংসতার চরম রূপের প্রভাব থেকে বিশ্বের কোনো অঞ্চলই বাদ নেই। অর্থাৎ, বিশ্বের সব অঞ্চলেই নারীদের ওপর এমন সহিংস ঘটনা ঘটছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারী ও মেয়েদের জন্য বাড়ি সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা। আর বিশ্বের সব জায়গায় নারী ও মেয়েরা আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে ইউএন ওমেনের উপনির্বাহী এক্সিকিউটিভ নায়ারাদজায়ি গুমবোঞ্জভান্দারের মতে, সংকীর্ণ লৈঙ্গিক মনোভাব আর সামাজিক নিয়মের মতো স্থায়ী সামাজিক সমস্যাগুলো এর বড় কারণ। তিনি বলেন, ‘এসব হত্যাকাণ্ড নারীর ওপর ক্ষমতা প্রয়োগের সঙ্গে জড়িত।’
প্রতিবেদনের তথ্য, আফ্রিকার দেশগুলোয় নারীদের ওপর এমন ঘটনা বেশি, নিহতের সংখ্যাও বেশি। ২০২৩ সালে আফ্রিকায় ২১ হাজার ৭০০ নারী ও মেয়ে ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও স্বজনদের হাতে খুন হয়েছেন। অর্থাৎ, প্রতি লাখে এ সংখ্যা ২ দশমিক ৯ জন। এর বিপরীতে সংখ্যাটি আমেরিকায় লাখে ১ দশমিক ৬ জন, ওশেনিয়ায় ১ দশমিক ৫ জন, এশিয়ায় দশমিক ৮ জন এবং ইউরোপে দশমিক ৬ জন।
বিভিন্ন চেষ্টা সত্ত্বেও নারী ও মেয়েদের হত্যার ঘটনাগুলো এখনো ‘আশঙ্কাজনকভাবে বেশি’ রয়ে গেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার এমন দুঃখজনক পরিণতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এ জন্য প্রয়োজন সময়মতো ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়া।