শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হরিনি আমারাসুরিয়াকে পুনরায় নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমার দিশানায়েকে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) প্রেসিডেন্ট তাকে এই পদে নিয়োগ দেন। এরপর হরিনি আমারাসুরিয়া কলম্বোতে শপথ গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেয়ার মধ্য দিয়ে আমারাসুরিয়া শ্রীলঙ্কার তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাস গড়লেন। এর আগে এই পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গা এবং সিরিমাভো বন্দরনায়েকে।
আমারাসুরিয়া একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, মানবাধিকার কর্মী এবং সমাজসেবী। শিক্ষা ও সামাজিক ন্যায়ের ক্ষেত্রে তার অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিত।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকের নেতৃত্বাধীন বামপন্থি জোট ২২৯ আসনের মধ্যে ১৫৯টি আসনে বিজয় লাভ করে। এ ফলাফলের পরই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমারাসুরিয়াকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এছাড়াও প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে তার মন্ত্রিসভায় প্রবীণ রাজনীতিবিদ বিজিথা হেরাথকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে বহাল রেখেছেন। তবে অর্থমন্ত্রীর পদে নতুন কোনো নাম ঘোষণা না করে তিনি নিজেই দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী পারিবারিক শাসনব্যবস্থা চললেও গত সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট পদে দিশানায়েকের জয় সেই আধিপত্যের অবসান ঘটিয়েছে। তার নেতৃত্বে গঠিত এনপিপি (ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার) জোট এবার সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনের পথ খুলে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কা এখনো পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে থাকায় দেশটি আন্তর্জাতিক ঋণ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতির মতো সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, আমারাসুরিয়ার পুনঃনিয়োগ এবং এনপিপি জোটের শক্তিশালী অবস্থান শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠন দেশটির ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।