র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকী, র্যাবের সাবেক সহকারী মহাপরিচালক জিয়াউল হাসান, তৎকালীন র্যাব-৮ এর প্রধান মেজর রাসেদসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে তিনি ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগ দায়ের করেন।
পরে মামলার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে লিমন বলেন, সব আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হোক। ফ্যাসিবাদী হাসিনার শাসন আমলে আমরা চাইলেও অপরাধী সবাইকে আসামি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। তাই ন্যায় বিচারের স্বার্থে আরও যারা বাকি আছে তাদের নাম আসামি হিসাবে যুক্ত করতে চাই।
এসময় র্যাবকে সন্ত্রাসী সংগঠন মন্তব্য করে বাহিনীটির বিলুপ্তির দাবিও জানান লিমন।
তার অভিযোগ, র্যাব- ৮ এর কিছু সদস্য আমাকে হত্যার উদ্দেশে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। পরে মামলা করতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা নিতে চায়নি। কোনো রকম দায়সাড়াভাবে মামলা রেকর্ড করে তৎকালিন দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা।
১৩ বছর ধরে পরিবার হয়রানির শিকার হচ্ছে উল্লেখ করে লিমন বলেন, একটি মামলায় এ যাবত আমরা পাঁচ বার নারাজি দিয়েছি এবং দুই-তিনবার রিভিউ আবেদন করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো সুরাহা পাইনি।
লিমন বলেন, আমিসহ আট জনের বিরুদ্ধে হওয়া দুটি মামলায় সবাই বেকসুর খালাস পেয়েছে, এতে প্রমাণিত হয় আমি নির্দোষ।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার জমাদ্দারহাটে র্যাবের অভিযানের সময় লিমন হোসেন গুলিবিদ্ধ হন।
তিনি জানান, র্যাব সদস্যরা তাকে ধরে নিয়ে পায়ে গুলি করেন। এর কয়েকদিন পর ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার বাম পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মাত্র ১২ দিন আগে এ ঘটনা ঘটে। তখন লিমনের বয়স ছিল ১৬ বছর। সে বছর আর পরীক্ষা দেয়া হয়নি তার।
তবে দমে যাননি তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পড়াশোনা করে পরের বছর পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার কাঁঠালিয়া পিজিএস বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪ পান তিনি। এরপর ভর্তি হন সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আবার একই প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হন তিনি।