Published : Tuesday, 12 November, 2024 at 2:33 PM, Update: 12.11.2024 2:37:34 PM
নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্ট কানায় কানায় ভর্তি ছিল মঙ্গলবার। গ্যালারিতে বসেছিলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। যাদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করেছেন, আশ্রয়হীন হয়ে অথবা মানসিক সহায়তার প্রয়োজনে রাষ্ট্র বা চার্চের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তারা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তাদের উপর অত্যাচার হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের সরকার এই অভিযোগ নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেছিল। কমিশনের রিপোর্টে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অত্যাচার বা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এরপরেই পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন নিজের এবং সাবেক সরকারের তরফ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তিনি বলেছেন, এমন ঘটনা যাতে আর কখনো না ঘটে, সে দিকে নজর দেয়া হবে। যে ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত হবে।
যারা এই অভিযোগ করেছিলেন, তাদের অধিকাংশই নিউজিল্যান্ডের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।
১৯৫০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে কমিশন। তাতে বলা হয়েছে, অন্তত ছয় লাখ ৫০ হাজার মানুষ অত্যাচার ও হেনস্থার শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অসংখ্য শিশু রয়েছে। তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার হয়েছে। বহু শিশু সরাসরি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, সরকারি এবং চার্চের প্রতিষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটার ফলে তারা সরাসরি অভিযোগ জানাতেও পারেনি সব সময়।
কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বহু শিশুকে সম্পূর্ণ অকারণে তাদের মায়েদের থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে জোর করে। শিশুদের অন্য লোকের কাছে দত্তক হিসেবে পাঠানো হয়েছে। শিশু এবং নারীদের উপর যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে।
কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত বর্ণবাদের কারণেই এই অত্যাচার চালানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের মাওরি জনগোষ্ঠীর মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশনের এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দোষীদের চিহ্নিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর কখনো না ঘটে, তার ব্যবস্থা করা হবে। রয়টার্স, এপি, এএফপি