জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জাতিকে বিভক্ত করার কঠিন ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বিভক্ত জাতি কখনো রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয়। আগামীর বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শুক্রবার (০১ অক্টোবর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত আমিরের শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে স্বৈরাচারের পতন পরবর্তী সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হচ্ছে, তা কোনো বিশেষ মহলের উস্কানিতে হচ্ছে কি না সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে হবে। কেউ খুন, গুম, ধর্ষণ, লুন্ঠন করলে তার ন্যায় বিচার করতে হবে। সকল ঘটনার ন্যায় বিচার নিশ্চিত হলে কেউ অপরাধ করার দুঃসাহস দেখাবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৫ বছরের কালো মেঘের ছায়া এখনো কেটে যায়নি। এই সময়ে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন, ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থ দেখার সময় এখন নয়। দল-মত ভিন্নতা থাকলেও জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যমত থাকতে হবে। কোনো বিভেদ রাখা যাবে না। নিজের চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়, এই কথা সবাইকে অন্তরে লালন করতে হবে। জাতীয় ইস্যুতে সবাইকে এক থাকতে হবে। আল্লাহর মেহেরবানি পেতে হলে তিনি যা পছন্দ করেন সেটাই করতে হবে।
এ সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করে তা ভাঙতে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকার কথাও জানান জামায়াত আমির। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব নিয়ে সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। জুলাই বিপ্লবের মতো সিন্ডিকেট ভাঙতে জনগণ সহায়তা করবে। দেশের যেকোনো প্রয়োজনে জামায়াতও সবার আগে এগিয়ে যাবে।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ শত শত নেতাকর্মী জুলুমের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। জুলুমের সব শেষ হয়ে যায়নি, রেশ এখনও রয়ে গেছে। তবে সবসময় জামায়াত সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। প্রতিহিংসা থেকে বিরত থাকতে নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জামায়াত আমির বলেন, স্বাধীন দেশ-জাতি অনেক বেদনাদায়ক দৃশ্য দেখেছে, জাতীয় জীবনে এগুলো অভিশাপ। কেউ জুলুম করুক সেটা চাই না, আমাদের কেউ কারও ওপর জুলুম করুক সেটাও চাই না। বিচারের মাধ্যমে যার যার পাওনা সে পাবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। বিচারের নামে জুলুম জামায়াত সমর্থন করে না। বিচারবহির্ভূত কোনো হত্যা জামায়াত কখনো সমর্থন করে না। খুনি হয়ে কেউ জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিক জামায়াত চায় না।