দীর্ঘ ১৫ বছর পর অপসারণ করা হয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহকে। তাতে অবশেষে ফজলুল্লাহ মুক্ত হলো চট্টগ্রাম ওয়াসা।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. আব্দুর রহমানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর ধারা ২ক-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ কে এম ফজলুল্লাহর চট্টগ্রাম ওয়াসার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলপূর্বক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করা হলো। জনস্বার্থে জারিকৃত আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে, গত ৭ অক্টোবর বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, পানি চুরি, প্রকল্পগুলো সময়মতো শেষ না হওয়া, বিভিন্ন প্রকল্পের নথিপত্র পর্যালোচনাসহ সব অনিয়মের তদন্ত করতে চট্টগ্রামে আসেন স্থানীয় সরকার বিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান।
১৯৪২ সালে জন্ম নেওয়া এ কে এম ফজলুল্লাহ চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে অবসর নেন ২০০০ সালে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৬ জুলাই প্রথমবার চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ পান। এরপর আরও এক বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ২০১১ সালে ঢাকা ওয়াসার আদলে চট্টগ্রাম ওয়াসাতেও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ তৈরি করা হয়। ওয়াসা বোর্ডও পুনর্গঠন করা হয়। তখন এমডি পদে নিয়োগ পান তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল্লাহ। সেই থেকে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এমডি পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার শাসনামলে টানা ৬ দফায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে চট্টগ্রাম ওয়াসার গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ। ওয়াসার প্রতিটি ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা ও বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অপরাধের কারণে তাকে এমডি পদ থেকে পদত্যাগ ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছিল বৈষম্যবিরোধী সাধারণ নাগরিক সমাজ।