জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার তিন মাস হয়ে এলো প্রায়। রাষ্ট্র সংস্কারের বিশাল প্রতিশ্রুতি সামনে রেখে বর্তমান সরকার তার বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে চললেও সমালোচনার খোরাক যোগাচ্ছে শেয়ারবাজারের দরপতন।
লাগাতার দরপতনের ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবারও (২৮ অক্টোবর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৭ পয়েন্ট বা প্রায় দেড় শতাংশ কমেছে। তাতে ডিএসইএক্স সূচকটি আরও কমে নেমে এসেছে ৪ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে।
এ অবস্থায় শেয়ারবাজারের ধারাবাহিক এমন দরপতনের কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে বিএসইসির তদন্ত কমিটি। নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে ইতোমধ্যে তদন্তের কর্মপন্থা ঠিক করেছেন কমিটির সদস্যরা।
এদিকে দরপতনের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন একদল বিনিয়োগকারী। এর আগে গত রোববারও বাজারে বড় ধরনের দরপতন হওয়ায় কয়েক শতাধিক বিনিয়োগকারী মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ করেছিলেন।
বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, টানা দরপতনে পুঁজি হারিয়ে নিস্ব হয়ে গেছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। অথচ, পুঁজির নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিএসইসি। তারা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা রাজপথে থাকতে চান না। কিন্তু সরকার ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ‘পতন ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায়’ বাধ্য হয়ে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, যেসব কোম্পানির শেয়ারের দরপতন সাম্প্রতিক সময়ে সূচকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, সেসব শেয়ারের বিক্রিতে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়েছে কি না, এ সময় ঋণ সমন্বয়ে কী পরিমাণ ফোর্সড সেল বা জোর করে বিক্রি হয়েছে, তার তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া বাজারের পতন ঠেকাতে করণীয়বিষয়ক সুপারিশের জন্য নবগঠিত কমিটি বাজার–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করারও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত রোববার বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ শামসুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল সংস্থাটি। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তদন্তের জন্য বেঁধে দেওয়া সময় কম হওয়ায় কমিটি গঠনের পরদিন থেকেই কাজ শুরু করেছে কমিটি।