গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডারের সেনাপতি ছিলেন সেলুকাস। আলেকজান্ডার তাকে নিয়ে বিভিন্ন দেশে অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে জয় লাভের পর সে ভারত প্রবেশের সময় এ উপমহাদেশের মানুষের চিত্র-বিচিত্র চরিত্র দেখে সেনাপতি সেলুকাসকে উদ্দেশ্য করে আলেকজান্ডার বলেছিলেন,
"সত্যিই সেলুকাস,কী বিচিত্র এই দেশ!"
আলেকজান্ডারের মৃত্যু পরবর্তীতে তার অধিকৃত এশিয়ার এলাকাগুলো গ্রিক সেনাপতিরা ভাগ করে নেন। সে অনুসারে সেলুকাসের ভাগে পড়ে সিরিয়া ও ভারতের(বাংলাদেশসহ) এলাকাগুলো।
আজ যদি আলেকজান্ডাররা বেঁচে থাকতো তবে বাংলাদেশের এই অবস্থা দেখে নিশ্চয়ই অবাক হয়ে সেলুকাস কে উদ্দেশ্য করে বলতেন,
"আহ্ সেলুকাস কী বিচিত্র এই বাঙ্গু ল্যান্ড(দেশ)!"
এতক্ষণ তো আলেকজান্ডার আর তার সেনাপতি সেলুকাসের মাঝে কথোপকথন কাহিনী বলছিলাম,এখন পয়েন্টে আসি
আলেকজান্ডারের দেওয়া উপাধি অনুযায়ী বিচিত্র আমার এই দেশে বিকাশ, নগদ, ইউর ক্যাশ সহ আরো কিছু হাবিজাবি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের মাধ্যমে ডিজিটালি অর্থ লেনদেন করা যায় (ফান্ড ট্রান্সফার করা হয়)।
কিন্তু প্রতিটি লেনদেনে (ট্রান্সফারে) প্রতিষ্ঠান ও লেনদেন ভেদে ১৫-২০ টাকা ভ্যাট ট্যাক্স মিলিয়ে হয়তো আরও বেশি অ্যামাউন্ট তথাকথিত সার্ভিস চার্যের নামে কেটে নেয়া হয়।
পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে প্রায় খরচাহীন এরকম লেনদেনে (ফান্ড ট্রান্সফারে) টাকা (সার্ভিস চার্য) কেটে নেয়ার নিয়ম আছে কি? আমার জানামতে নেই। হয়ত কোথাও নেই!!
আমেরিকায় মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম মূলত জেল (Zelle) এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। আমেরিকানরা তাদের মোবাইল নাম্বার অথবা ইমেইল আইডি ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম (ফান্ড ট্রান্সফার) তথা ডলারের লেনদেন করে থাকে।
যা নির্দিষ্ট এমাউন্ট স্থানান্তরিত হয়ে যায়।
(রিয়েল টাইম ট্রান্সফার) বা হাত বদল হয় কয়েক মুহূর্তের মাঝেই এক ব্যাংকে থেকে (আন্তঃ ব্যাংকিং লেনদেন) অন্য ব্যাংকের একাউন্টে।
এসমস্ত লেনদেন কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের ১পেনীও সার্ভিস চার্য কর্তন করে না।
আমেরিকাতে এই "জেল"মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ছাড়াও সেখানে "ক্যাশএ্যাপ" নামেও আরো একটি মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস চালু রয়েছে। সেটাতেও খুব সহজে অর্থ লেনদেন(ব্যাংকিং কার্যক্রম) করা যায়। তারাও জেল(Zelle) এর মতো ১পেনীও সার্ভিস চার্য কাটেনা।
অথচ বাংলাদেশে প্রায় একই রকম মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো তথাকথিত সার্ভিস চার্জের নামে সাধারণ জনগণের পকেট কাটছে বছরের পর বছর, হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। কিন্তু কেন?? এসব দেখার কি কেউ নেই?
শুধুমাত্র এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবাতে এত এত লুটপাট দেদারছে চলছে প্রায় দেড় যুগ ধরে। অথচ আমরা আম জনতা নিশ্চুপ কারো কোন প্রতিবাদ নেই!!
আর সরকার? সেকি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছে,যে জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করবে বা ভাববে??
"আহ্ সেলুকাস কি বিচিত্র এই বাঙ্গু ল্যান্ড(দেশ)!".#