লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না কোনো কিছুতেই। পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর। বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গঠিত সিন্ডিকেটের কারণে ডিম, মাছ ও সবজির বাজারের আগুন অন্তর্বর্তী সরকারও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। উল্টো অনেকক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ যেন অসম্ভব হয়ে উঠছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম আবারও বেড়েছে। অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার আশপাশে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে কারওয়ানবাজারসহ কয়েকটি বাজারের ক্রেতারা বলেছেন, বন্যার কারণে বাজার সবজি আসতে পারছে না। আর ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেককে।
এছাড়া প্রায় বিভিন্ন জাতের মাছের দাম প্রতিকেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। ইলিশে বেড়েছে দুই থেকে তিনশ’ টাকা পর্যন্ত। তবে ডজনে ১০ টাকা কমেছে ডিমের দাম।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশর (টিসিবি) তথ্যমতে, এক মাসের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৮২ থেকে ১৫০ শতাংশ বেড়েছে।
এ ছাড়া বেগুন মানভেদে কেজিতে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, টমেটো কেজিতে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, পটল ও ঢেঁড়স যথাক্রমে ৮০ থেকে ১০০ এবং ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ঢাকার বাইরেও সবজি, মাছ–মাংস ও ডিমের বাজারের চিত্রও প্রায় একই। রাজশাহীর বাজারে বেড়েছে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দাম। কেজিতে ১৫০ টাকা বেড়ে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা কেজি দরে। পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি।
একইভাবে কেজিতে ৫টাকা বেড়ে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। ৪০ টাকার লাউ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। বেগুন ১২০ টাকা কেজি। রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা। করোল্লা ১০০ টাকায় কেজি।
বেড়েছে মুরগির ডিমের দাম। ডজনে ১৮ টাকা বেড়ে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা এবং গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।
অন্যদিকে রুই থেকে ইলিশ সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ১৭০০ টাকার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০-২০০০ টাকায়। ৪৫০ টাকার রুই ৬০০ টাকায়। এ ছাড়াও আজকের বাজারে পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বাড়লে পণ্যের দাম কমে এবং সরবরাহ ঘাটতি থাকলেই দাম বাড়ে এতে তাদের করার কিছু নেই। আর ক্রেতারা বলছেন, সকল পণ্যের দাম ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামত নিয়ন্ত্রণ করে। প্রয়োজন সরকারের কঠোর নজরদারি।
সবজির চড়া দামে হতাশ সাধারণ ক্রেতারা। তারা বলছেন, গত সপ্তাহে যে বরবটি ৬০ টাকায় কিনেছেন তা এখন ১০০ টাকার ওপরে। এভাবে হলে চলা দায় হবে। আর বিক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন এলাকায় বন্যার কারণে আমদানি কম হওয়ায় দাম বেড়েছে।
গত সপ্তাহের চেয়ে বাজারে ব্রয়লার কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৮৫, সোনালি প্রতি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৬০, লেয়ার ৩১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পেঁয়াজ ১০০-১১০ আলু ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বৃদ্ধি পেয়েছে কাঁচা মরিচ, সবজি ও ডিমের দাম। কেজিতে কাঁচা মরিচের দাম ১৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা। ডিমের দাম ডজনে ১২টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকা থেকে ১৮০টাকা।
৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে সবজির দাম। বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়ে পেপে ৩০ টাকা থেকে ৪০টাকা, ঢেঁড়স ৫৫থেকে ৬৫ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, লাল শাক ৫০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা, বরবটি ৪৫ থেকে ৬৫ টাকা, বিক্রি হচ্ছে। দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে অসন্তোষ।