Published : Wednesday, 9 October, 2024 at 11:10 PM
সাকিব আল হাসান চেয়েছিলেন ঘরের মাঠে এসে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে। তবে সেজন্য নিরাপত্তা ও নিরাপদে দেশ ছাড়ার নিশ্চয়তাও চাইছিলেন তিনি। বিসিবি ও সরকারের পক্ষ থেকে সেরকম কোন নিশ্চয়তা না পাওয়ায় ঝুলে ছিলো তার বিদায়ী আয়োজন। বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে অবস্থান ব্যাখ্যা করার আহ্বান ছিলো সাকিবের প্রতি। অবশেষে গত জুলাই মাসে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে নিহতদের স্মরণ করে পোস্ট দিয়েছেন তিনি। আহ্বান করেছেন বিদায়ে সবাইকে পাশে থাকার।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাগুরা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সাকিব। দেশের সর্বকালের সেরা এই ক্রিকেটার সরকার পতনের আন্দোলনে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতায় কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি।
ক্ষমতার পালাবদলের পর অজস্র মামলার ভিড়ে একটি হত্যা মামলায় আসামী করা হয় সাকিবকেও। এছাড়া শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির অভিযোগে তাকে জরিমানাও করা হয়। এমন বাস্তবতাও বাংলাদেশের হয়ে খেলছিলেন সাকিব। সেসব খেলা ছিলো দেশের বাইরে। পাকিস্তান সিরিজের পর ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের আগে অবসর ঘোষণা দেন সাকিব। জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলতে চান নিজের শেষ টেস্ট। ওয়ানডে খেলতে চান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত। তবে দেশে তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা জানান।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ নিরাপত্তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টাও সাকিবের ব্যাপারে দেন নেতিবাচক অবস্থানের আভাস। তিনি সাকিবকে অবস্থান পরিষ্কার করতে বলেন।
সাকিব দেশে ফিরতে পারবেন কিনা এমন আলোচনার মধ্যে নিজের ফেসবুক পোস্টে অবশেষে আন্দোলনে নিহতের স্মরণ করে সাকিব লেখেন, 'শুরুতেই আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সে সকল আত্মত্যাগকারী ছাত্রদের, যারা বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন। তাদের প্রতি এবং তাদের পরিবারের প্রতি আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে শ্রদ্ধা এবং সমবেদনা।'
'এই সংকট-কালীন সময়টাতে আমার সরব উপস্থিতি না থাকায় আপনারা যারা ব্যথিত হয়েছেন বা কষ্ট পেয়েছেন তাদের অনুভূতির জায়গাটার প্রতি আমার শ্রদ্ধা এবং এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আপনাদের জায়গায় আমি থাকলে হয়তো এভাবে মনঃক্ষুণ্ণ হতাম।'
এরপরই নিজের শেষ টেস্টে সবাইকে পাশে চান তিনি, 'আপনারা জানেন, খুব শীঘ্রই আমি আমার শেষ ম্যাচটি খেলতে যাচ্ছি। আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আজকের সাকিব আল হাসান হয়ে ওঠা পর্যন্ত এই পুরো জার্নিটাকে ড্রাইভ করেছেন আপনারা। এই ক্রিকেটের এই গোটা গল্পটা আপনাদের হাতেই লেখা! তাই আমার শেষ ম্যাচে, এই গল্পের শেষ অধ্যায়ে, আমি আপনাদেরকে পাশে চাই।'