বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাউবি) এলএলবির ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেন। মেধাতালিকা কিংবা অপেক্ষমাণ তালিকার কোথাও ছিল না নাম। তার পরও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ঠিকই ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি যুব মহিলা লীগের ঢাকা উত্তরের সাবেক সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিন।
একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুকম্পায় সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হয়েছিলেন। বাউবির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এই অবৈধ ভর্তিতে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
বাউবি সূত্র জানিয়েছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট। ২২ আগস্ট ফল প্রকাশিত হয়। এরপর অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি নেওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশিত হয় গত বছরের ৬ নভেম্বর।
তখন প্রকাশিত মেধাতালিকা এবং অপেক্ষমাণ তালিকার কোথাও সাবিনা আক্তার তুহিনের ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর (২৩০২৪১৯৯) খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু হঠাৎ করেই ২০ নভেম্বর আলাদা করে তাকে ভর্তি করায় বাউবি প্রশাসন।
বাউবির ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রের তৎকালীন পরিচালক বরাবর পাঠানো একটি চিঠি কালবেলার হাতে এসেছে। চার বছর মেয়াদি এলএলবি (সম্মান) প্রোগ্রামে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম সেমিস্টারের একজন ভর্তি প্রার্থীর ভর্তির অনুমতি বিষয়ে ওই চিঠি পাঠানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট সাপোর্ট সার্ভিসেস (এসএসএস) বিভাগের পরিচালক ড. আনিস রহমানের স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাউবির এলএলবি (সম্মান) প্রোগ্রামে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে এক ভর্তি-প্রার্থীর (সাবিনা আক্তার তুহিন) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম সেমিস্টারে ভর্তির অনুমতি দেওয়া হলো। বিষয়টি ভর্তি-প্রার্থীকে জানানো এবং বাউবির আইসিটি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার অনুরোধ করা হলো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাউবির একজন কর্মকর্তা বলেন, মেধাতালিকা কিংবা অপেক্ষমাণ তালিকায় কারও নাম না থাকলে কোনো প্রার্থীকে ভর্তি করানোর সুযোগ নেই। এটি স্পষ্ট অনিয়ম। কিন্তু বাউবিতে এমন ঘটনা ঘটেছে। উপাচার্য সৈয়দ হুমায়ুন আখতারসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা থাকায় বিষয়গুলো নিয়ে কারও মুখ খোলার সাহস নেই।
এ বিষয়ে জানতে সাবিনা আক্তার তুহিনকে একাধিকবার ফোন করা হয়; কিন্তু তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।