দিল্লিতে বুধবার বাংলাদেশ দলের সিরিজ বাঁচানোর মিশন। কিন্তু ঠিক এই মুহূর্তে সিরিজ ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে মাহমুদউল্লাহ এই ঘোষণা দেন। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ খেলেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ইতি টানবেন তিনি।
মাহমুদউল্লাহর এমন সিদ্ধান্ত হুট করেই নয়। ভারতে আসার আগেই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছিলেন, ‘এই সিরিজের পরেই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেবো। এটা আমি সফরে আসার আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম।’ ক্যারিয়ারে তার কোনও আক্ষেপ আছে কিনা জানতে চাইলে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘না, আমার কোনও আক্ষেপ নেই।’
অনেকদিন ধরেই ফর্ম-ফিটনেস নিয়ে সমালোচিত হচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলকে ডুবিয়েছেন। পুরো টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ধীরগতির ব্যাটিং করে ক্রিকেটবিশ্বেই ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। অমন বাজে পারফরম্যান্সের পরও ভারত সিরিজের দলে তাকে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। চলতি বছর বিশ্বকাপে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হয়েও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারেননি। ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ ১৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। দুই ম্যাচে ফিফটি করেছেন। সবশেষ ১০ ম্যাচের কোনোটিতে ২৫ রানের ওপর উঠাতে পারেননি।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম এই ক্রিকেটার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এক সময় নেতৃত্বও দিয়েছিলেন। তার অধীনে ২০২২ বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ। ওই বিশ্বকাপে চরম হতাশা উপহার দেন ‘আনসাং হিরো’ খ্যাত মাহমুদউল্লাহ। বিশ্বকাপের বাজে পারফরম্যান্সের খেসারত দিয়ে অধিনায়কত্ব হারানোর পাশাপাশি দল থেকে বাদও পড়েন। পরে কঠোর অনুশীলন করে দলে ফিরলেও পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটাতে পারেননি।
এই ফরম্যাটে মাহমুদউল্লাহ ১৩৯ ম্যাচে ২৩.৪৮ গড়ে ২ হাজার ৩৯৫ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১১৭.৪। বল হাতে নিয়েছেন ৪০ উইকেট। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত খেলেছে ১৭৭ টি-টোয়েন্টি, মাহমুদউল্লাহ মাঠে ছিলেন অধিকাংশ ম্যাচেই।
এর আগে জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ চলাকালে টেস্ট সিরিজকে বিদায় বলে দিয়েছিলেন তিনি। হারারে টেস্টে ১৫০ রানের ইনিংস খেলে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন। হুট করে অভিমানে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলার পর প্রবল সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন। আজ টি-টোয়েন্টিকেও বিদায় বললেন তিনি। তবে মাহমুদউল্লাহ ওয়ানডে ফরম্যাট চালিয়ে যাবেন। আগামী বছর পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে ওয়ানডেকেও হয়তো বিদায় জানাবেন তিনি।