| শিরোনাম: |
আওয়ামী ধর্মে দীক্ষিত হলেই কি হিপটোনাইজ টু ‘শেম ‘সাইকোপ্যাথ হয়ে যায়?
Published : Monday, 7 October, 2024 at 12:04 PM, Update: 07.10.2024 1:05:14 PM
সাগর ইসলাম। যিনি পেশায় একজন রিক্সা চালক।
তার বাহনে আরোহনকালে নানা কথার ছলে জানলাম, তিনি পতিত ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনার একজন বিশাল ভক্ত ও দলীয় অনুসারী। তিনি তার নেত্রীর বর্তমান পরিস্থিতির জন্য বেশ ব্যথিত। তবে সাহস পাচ্ছিলেন না বলতে। অভয় দেয়ার পর কিছু কথা বললেন। তার পলায়নকারী নেত্রীকে নিয়ে প্রশংসাসূচক নানা কথার পর ছবি তুলতে অনুমতি দেন।
কি অবাক হচ্ছেন? বাস্তবতা এটাই গোপালগঞ্জের রিকশা চালক বলে কথা। তার বেশভুষা, রুটি-রুজির বাহনের অগ্রভাগে পাবলিককে ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে লাঠি টাঙ্গিয়ে রাখার মত উগ্রচিন্তা। হয়তো শুধু এই জেলার কিছু মানুষের পক্ষেই সম্ভব!!
সুতরাং একবার ভাবুন তো আওয়ামীস্টদের দেবতা শেখ মুজিব ওরফে শেমু'র কন্যা শেখ হাসিনা এই জেলার মাটিতেই জন্মেছেন। তার চিন্তা চেতনা কতটা উগ্র, নিষ্ঠুর বা পৈচাশিক হতে পারে?
গোপালগঞ্জ জেলায় আওয়ামীস্টদের দ্বারা সংঘটিত সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, পোড়ানো। বিএনপি'র অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের উপর পৈচাশিক কায়দায় হামলা চালিয়ে ২জন কেন্দ্রীয় নেতাকে হত্যা করা। নানা উগ্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সহ ফেসবুক ইউটিউব ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে লাইক কমেন্টে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কট্টর নেতা-কর্মী, সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি জানান দিচ্ছে।
বিশেষ করে ফেসবুকে তাদের দলের ‘Bangladesh Awami League’ ভেরিফাইড যে পেজ'টি রয়েছে, সেখান থেকে বাংলাদেশে অবস্থানকারী (৮জন) এডমিন প্রতিনিয়ত নানা ফেক কন্টেন্ট/নিউজ প্রপাগান্ডার মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে তারা এখনো নিঃশেষ হয়ে যায়নি, কতটা সক্রিয়!! নানাভাবে উৎসাহ জোগাচ্ছে সারাদেশে তাদের ফ্যাসিজম অনুসারীদের সক্রিয় হতে।
তাদের প্রধান এই ফেসবুক পেজ'টি ছাড়াও অন্যান্য পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকে ক্রমাগত কাল্পনিক বয়ানের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করছে,যে কিভাবে তারা পুনরায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফিরতে পারে! কাটপিস ভিডিও ক্লিপ এদিক ওদিক করে বানোয়াট, মিথ্যা গল্পের কনটেন্ট বানিয়ে সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। বলার চেষ্টা করছে বর্তমান অন্তর্বর্তকালীন সরকার এবং বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা কতটা খারাপ কাজ করছে। কতটা অন্যায়, অত্যাচার করছে!!
এমনকি সেখানে কিছু কিছু পোস্টে হাসিনা’র কন্ঠ AI বেইজড সফটওয়্যারে অবিকল ডুপ্লিকেশন করে সরকার ও আইনশৃঙ্খল রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রচ্ছন্ন হুমকি দেয়ারও চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে প্রতীয়মান। যেন তাদের ফ্যাসিস্ট অনুসারীদের উৎসাহ যুগিয়ে মাঠে নামানো যায়।ফিরিয়ে আনা যায় বাংলাদেশে আওমীস্টদের সেই ঐতিহ্যবাহী পৈশাচিক নির্যাতন, গুম, খুন, আয়না ঘর ও লুটপাটের দিন।
চিন্তা করা যায় তারা (আওয়ামীস্টরা) কতটা ভয়ংকর! কতটা নিষ্ঠুর! মাত্র ৬২ দিন আগেই যারা হাজার হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা,গুম খুন করেছে। লাখ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পুরে নির্মম অত্যাচার করেছে। করেছে রাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্য সহ সকল অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে দেদারসে লুটপাটের মত জঘন্য ক্ষমাহীন অপরাধ। করেছে বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে হাসিনা ও তার প্রভু দেশের আজ্ঞাবহ।
এরপরে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের চূড়ান্ত মাহেন্দ্রক্ষণ ২০২৪ এর ৫ আগস্ট (৩৬'জুলাই) গণহত্যার দায়ে টিকতে না পেরে পদত্যাগ করে তাদের দেবতা "শেমু" কন্যা হাসিনা প্রাণ বাঁচাতে তার প্রভু দেশে পালায়নের মাধ্যমে অবসান হয় টানা ১৬ বছরের আওয়ামীস্টদের ফ্যাসিবাদী শাসন।
হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পরপরই গুঞ্জন রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তাদের ছোট-বড় বহু নেতা,মন্ত্রী আমলা শত শত কোটি টাকার বিনিময়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
এর ১০/১২ দিন পর থেকে তাদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, পাতিনেতা, সমর্থকদের ফেসবুকে পোস্ট দেখেছি, কথাও হয়েছে কয়েকজনের সাথে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, তাদের লেখাতে দেখিনি বা কথাতে শুনিনি, যে সবকিছু মিলে তারা খুব অনুতপ্ত। জাতির সাথে তাদের, নেতা-নেতৃদের বেশ অন্যায় হয়েছে! তারা এমন'টা না করলেও পারতো!!
কোন আওয়ামীস্টকে বলতে শুনিনি, আবু সাঈদ, মুগ্ধ সহ হাজার হাজার নিরীহ ভাই বোনদের নির্মম মৃত্যুতে এবং ২০ হাজারেরও বেশী আহত মানুষের আহাজারিতে তারা একটু অনুতপ্ত। কিংবা তাদের খারাপ লেগেছে, বাড়ীর ছাদে যাওয়া ৬বছরে শিশু রিয়া'র পিতা-মাতার কোলে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হওয়াতে।
বলতে শুনিনি কোন আওয়ামীস্টকে দেশ থেকে নানা উপায়ে গত ১৬ বছরে ১৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী অর্থ পাচার হওয়াতে তারা দুঃখিত।
বলতে শুনিনি কোন আওয়ামীস্টকে, ১৬ বছর যাবৎ বিচার বহির্ভূত হত্যা জুডিশিয়াল কিলিং গুম,খুন ও আয়না ঘরে বছরের পর বছর আটকে রেখে হাজার হাজার মানুষের প্রতি নিষ্ঠুর অবিচার খুবই দুঃখজনক!!
এমনকি পশ্চিমে বেড়ে উঠা শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নানা বিবৃতিতে একবারও বলতে শুনিনি যে তারা মা ও তাদের দলের লোকেরা বাংলাদেশের মানুষের সাথে ভীষণ অন্যায় করেছে! তিনি তাতে ভীষণ অনুতপ্ত!!
আমি শুধুই তাদের লেখায় পড়েছি, বলতে শুনেছি..
‘দেখবো সুদখোর রক্তচোষা ইউনুস কয়দিন চালায়
আমাদের দেশরত্ন হাসিনা সরকারই ভাল ছিল
ভারত আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে,
ভারত বিরোধীতা করে দেখবো তোরা কতক্ষণ টিকবি?’
এই স্বাধীনতা কি জনগণ চেয়েছিল?
মুখে ইউনুস ভারত বিরোধিতা করে,
আর তলে তলে করে তোষামোদি!
এই যে দেখ ৩ হাজার টন ইলিশ দিয়েছে’
‘দেশ তো ২০ বছর পিছিয়ে গেল
বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশকে বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিল। আর এখন দেখ, বিদ্যুৎ নাই,গ্যাস নাই,চারদিকে হাহাকার!’
‘বার বার দরকার হাসিনা সরকার’
আমি বুঝিনা একটি দলের রাজনীতি করা বা সে দলের প্রতি ভালোবাসা থাকা মানেই কি আমরাই সঠিক আর বাকীরা সব বেঠিক? আমি সেই দলের দাস বা গোলাম? দলের নেতা-নেতৃরা দেবতা বা ফেরেস্তা তুল্য? নেতা নেতৃকে সব অপরাধ বা ভুলের উর্ধ্বে মনে করব? আমার কোন বিবেক থাকবে না? বিরোধীদের প্রতি আমাকে সর্বোচ্চ কতটা পাষাণ হওয়া যায় সেটার প্রতিযোগিতা করতে হবে? দেশের মানুষের প্রতি কোন মায়া মমতা ভালোবাসা থাকা যাবে না? নাকি আওয়ামী ধর্মে দীক্ষিত হলে তারা সকলেই হিপটোনাইজ টু ‘শেমু’ সাইকোপ্যাথ হয়ে যায়?
জানিনা আওয়ামীস্টদের মহান রাব্বুল আলামীন কোন আলাদা মাটি দারা সৃষ্টি করেছেন কিনা!
নাকি তারা রবের সাথে এতটাই
নাফরমানি করেছে,
যে তিনি তাদের মানুষত্বই মিটিয়ে দিয়েছেন??
অন্তঃহীন ধিক্কার ওই সমস্ত আওয়ামীস্ট দলকানা বিবেকহীন,অন্ধ রাজনৈতিক নেতা-কর্মী,সমর্থকদের যাদের কোন অনুশোচনা নেই এবং নেই নিজ জাতি ও দেশের প্রতি নূন্যতম মায়া,ভালবাসা, আন্তরিকতা।
সেই সাথে আমার মত দেশবাসী সহ সারা বিশ্বের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে বিশ্বাসী কোটি কোটি মানুষ অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছে ৩৬ জুলাই দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে মাধ্যমে বাংলাদেশের যে বিপ্লবী সরকার গঠিত হয়েছে, তাদের দিকে।
যে যাই বলুক তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) অবশ্যই গণ আকাঙ্খাকে উপেক্ষা করবে না। বিডিআর'এ সেনা হত্যা, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি সহ দেশে গত ১৬ বছরে গুম, খুন, নির্যাতন, লুণ্ঠন এবং ২০২৪'এর জুলাই-আগস্টে গণহত্যায় জড়িত আওয়ামীস্টদের সকল নেতা-কর্মী, মন্ত্রী, আমলা, পুলিশ ও সামরিক, আধা সমরিক বাহিনীর সদস্যদের অবশ্যই সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করবে।
পাশাপাশি দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষ মনেকরে তারা(আওয়ামীস্টরা) যে রাজনৈতিক দলের উপর ভর করে এত পৈচাশিকতার সুযোগ নিয়েছে সেই দলেরও বিচার বিলম্ব ব্যতিরেকে নিশ্চিত করবে ড. মোঃ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেমোক্রেসি।
Email: [email protected]
দেশসংবাদ/এএসএম
|
আপনার মতামত দিন
|
সর্বশেষ সংবাদ
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দুই উপদেষ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটি গঠন
ভয়ঙ্কর রূপে ডেঙ্গু, একদিনে আরও ৭ মৃত্যু
সিলেটের মিললো ৮ মিলিয়ন গ্যাসের সন্ধান 
সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত
সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর জামিন
৭ ইসরায়েলি গ্রেপ্তার, অভিযোগ ইরানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি! 
‘নাশতা না খেয়ে হইচই করার’ কারণে চাকরি হারান ২৫২ এসআই
রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা
খুলনায় হাসিবুর হত্যায় ২১ জনের যাবজ্জীবন
সর্বাধিক পঠিত
যে কারণে রাতেই রাশিয়া যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব
বাস-টেম্পু সংঘর্ষে একই পরিবারের ১২ জন নিহত
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ব্যারিস্টার সুমন 
‘হাসিনার পদত্যাগপত্রের ভূমিকা নেই’
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ঘেরাও করে তালা দিলো গ্রাহকরা
২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ করে প্রজ্ঞাপন
২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের
ক্ষমা চাইলেন ব্যারিস্টার সুমন
কাজের বৈধ পারমিট না থাকায় ৩৪ বাংলাদেশি আটকফেসবুকে আমরা
সম্পাদক
এফ. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
