দেশের বাজারে ডিম এবং মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে গত ২০ দিনে ২৮০ কোটি টাকা ভোক্তাদের পকেট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।
শনিবার (৫ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এমন অভিযোগ করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার।
সরকার গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয়। এতে বলা হয়, উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১০.৫৮ বিক্রি করতে পারবে, যা ভোক্তা পর্যায়ে ১২ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা।
বিপিএ বলছে, যাদেরকে সঙ্গে নিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, তারা কেউ সরকার-নির্ধারিত দামে বিক্রি করেনি। শুধু করপোরেট গ্রুপদের পরামর্শে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও কৃষি বিপণন থেকে ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করার কারণে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতিটি ডিম করপোরেট উৎপাদক পর্যায়ে ১১.০১ বিক্রির কথা স্বীকার করলেও তারা প্রতারণার মাধ্যমে প্রতিটি ডিম বিক্রি করেছেন ১১.৮০ থেকে ১২.৫০ পর্যন্ত, যা খুচরা বাজারে বিক্রয় হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। প্রতিটি দিমে ২ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ৪ কোটি ডিমে ৮ কোটি টাকা হয়। গত ২০ দিনে ১৬০ কোটি টাকা ভোক্তাদের পকেট থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
এতে আরও জানানো হয়, প্রতিটি মুরগির বাচ্চা ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে একই বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫৬ টাকায় এবং ডিমের মুরগির বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতিদিন সব ধরনের মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয় ৩০ লাখ। প্রতিটি বাচ্চায় যদি ২০ টাকা বেশি ধরা হয়, প্রতিদিন ৬ কোটি টাকা হয়। গত ২০ দিনে প্রান্তিক খামারিদের সঙ্গে প্রতারণা করে ১২০ কোটি টাকা কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত মুনাফা করেছে।
ডিম ও মুরগির বাজারে চলমান অস্থিরতার পেছনে ফিড মুরগির বাচ্চার কোম্পানি ও তাদের অ্যাসোসিয়েশনগুলোর এবং তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিরসহ আরও অনেকের শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে বলে জানিয়েছে বিপিএ।
‘প্রান্তিক একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০.২৯ টাকা। ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকা যদি ভোক্তা পর্যায়ের দাম থাকে তবে যৌক্তিক দাম। ডিম ও মুরগির বাজারে স্বস্তি রাখতে পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট ভেঙে ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ কমাতে পারলে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন এবং ভোক্তারা সস্তায় ডিম ও মুরগি খেতে পারবেন’, যোগ করে বিপিএ।