হাজিরা বোনাস, নাইট-টিফিন বিল বৃদ্ধি ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসানের অপসারণসহ ১২ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে আবারও বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ২টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন গাজীপুরের ভবানীপুর এলাকার আর এন্ড জি বিডি গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা।
এ দিকে শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে মহাসড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পরে প্রশাসন ব্যবস্থাপক হাসান স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সড়ে যান। এরপর বিকেল ৫টার দিকে ওই মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
শ্রমিকরা জানান, যেসব কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করা হচ্ছে, তারা প্রায়ই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শ্রমিকদের গায়ে হাত তোলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন। তাদের এসব আচরণের বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসন বিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তারা কোনো ব্যবস্থা নেন না। যে শ্রমিক অভিযোগ করে উল্টো তাকে প্রশাসন বিভাগে ডেকে নিয়ে লাঞ্ছিতসহ চাকরিচ্যুত করে দেন। আমাদের হাজিরা বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিল নিয়েও কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করলেও তারা আমাদের এসব আবেদনের কোনো গুরুত্ব দেয় না।
তারা আরও বলেন, যেসব শ্রমিক এসব দাবির সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে বিনা কারণে বরখাস্ত করা হয়। পরে এক সময় তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়।
এসব বিষয়ে মানব সম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসান জানান, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা অযৌক্তিক, মিথ্যা এবং বানোয়াট। বর্তমান পরিস্থিতিতে কি কোনো শ্রমিকের গায়ে হাত তুলা যায়? উল্টো তিনি সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রাখেন।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, আর এন্ড জি বিডি গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার মানব সম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসান স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে তাদের সব দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নিলে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সড়ে যান। এরপর বিকেল ৫টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের অভিযোগ ও দাবিগুলো হলো: কারখানার মানব সম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসান বিভিন্ন বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশাসন বিভাগে ডেকে এনে ছোট ছোট বিষয় নিয়ে গালিগালাজ, গায়ে হাত তোলাসহ চাকরিচ্যুত করেন, তাদের বর্তমান হাজিরা বোনাস ৫০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০০০ টাকা, রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করলে টিফিন বিল ২০ থেকে বৃদ্ধি করে ৪০ টাকা, ছুটি কাটালে হাজিরা বোনাস কাটা যাবে না।
আরও দাবিগুলো হলো: অর্জিত ছুটির টাকা প্রতি বছরের জানুয়ারি মাসে পরিশোধ করতে হবে, ভেতরে কেন্টিনের ব্যবস্থা করতে হবে, শ্রমিকের প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের প্রাপ্য ছুটি দিতে হবে, প্রশাসন ম্যানেজার অযথা কোনা শ্রমিককে সেকশনে ডেকে এনে খারাপ আচরণ করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, সপ্তম তলার উৎপাদন ব্যবস্থাপক (পিএম) হাসান, আইই সেকশনের আশরাফুল ইসলাম ও নছিমা আক্তার এবং কারখানার মেডিকেল সেকশনের চিকিৎসক নুসরাত শারমীন আসমার অপসারণ। এসব দাবি করে শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন।