Published : Thursday, 19 September, 2024 at 11:36 PM, Update: 19.09.2024 11:50:25 PM
নবনির্মিত অফিসার্স ক্লাব ঢাকার বহুতল ভবনে সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশন সাপ্লাই ও ইনস্টলেশন এর কাজে বড় রকম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, মূলত অফিসার্সদের জন্য নির্মিত এই ভবনটির যশোর- ৬ আসনের সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদার আত্মীয় ঠিকাদার মিনারুল আলম চাকলাদার মালিকাধীন পদ্মা অ্যাসোসিয়েটস। যারা গণপূর্ত অধিদপ্তর (পি.ডাবলু.ডি) থেকে এই কাজটির দায়িত্ব নেয়। পরে পদ্মা অ্যাসোসিয়েটস কাজটি ভাগ করে দেয় বিভিন্ন ছোট ঠিকাদারদের মধ্যে। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল গ্রীন টেক। এই প্রতিষ্ঠানটি মালিক মূলত আওয়ামী সরকারের সাবেক মহিলা এমপি ও কেন্দ্রীয় সৈনিক লীগের সভাপতি শিরিন আহমেদ এর মেয়ের জামাতা মোহাম্মদ আতিক আহমেদ।
অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদ আতিক আহমেদ শাশুড়ির দলীয় প্রভাব ও পি.ডাবলু.ডি এর অতিরিক্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার জনাব আশরাফ সাহেব এর মাধ্যমে মোটাঅংকের অর্থ লেনদেন করে কাজটি বাগিয়ে নেন। এই কাজটি মূলত Climaveneta ব্র্যান্ড দিয়ে কাজটি হাতিয়ে নেন। কিন্তু অফিসার্সদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই ভবনে পি.ডাবলু.ডি কর্তৃপক্ষ ও অফিসার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে মূল ঠিকাদারকে আমেরিকান প্রোডাক্ট দানাম বুশ ব্র্যান্ড লাগানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি ইস্যু করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়, কেন দানাম বুশ ব্র্যান্ডের এসি লাগাতে হবে? কারণ হিসেবে তারা ব্র্যান্ড কোয়ালিটি, প্রোডাক্ট কোয়ালিটি, কারিগরি বিষয়,বাইরের শব্দ, ও বিদ্যুৎ সাশ্রয় এই বিষয়গুলো উল্লেখ করে। কিন্তু পি.ডাবলু.ডি কর্তৃপক্ষ এবং অফিসার্স ক্লাব কর্তৃপক্ষকে উপেক্ষা করে আতিক তার শ্বাশুরির দলীয় প্রভাব ও ক্ষমতার মাধ্যমে আমেরিকান ব্র্যান্ডের এসি বাদ দিয়ে সে তার নিজের মত একটা ব্র্যান্ড দিয়ে সরকার পতনের পূর্বে ওয়ার্ক অর্ডার নিয়ে নেয় পদ্মা অ্যাসোসিয়েটস থেকে।
সরকার পতনের পর পরই আতিকের শাশুড়ি সাবেক মহিলা এম.পি রয়েছেন আত্মগোপনে। এমন পরিস্থিতে আতিক কাজটি হাতছাড়া কিংবা বাতিল হওয়ার ভয়ে তাড়াহুড়া করে সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে এলসি খুলে। কিন্তু এলসিতেও দেখা যায়, সেখানেও বড় ধরনের অনিয়ম।
আতিকের প্রোডাক্ট অরজিনাল ইতালি থাকলেও সে প্রিন্সিপালে এল সি না খুলে, সে এল সি খুলেছে সিঙ্গাপুর চার্টার্ড ব্যাংকে। যেটি মূলত নিয়মের বর্হিভূত। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাছাড়াও ওয়ার্ক অর্ডারে কাজের জন্য মোট মার্কেট ভ্যালু প্রায় ২৪ কোটি টাকা হলেও কিন্তু আতিক দুটি এলসি তে মোট ব্যয় করে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার এল সি খুলেছে। বাকি ২২ কোটির টাকার এলসি কোথায় গেলো এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এর এলসিগুলো মোটেও ভালো নয়, যা অতি নিম্নমানের। যা কোনো রিসোর্স থেকে সংগ্রহ করতে পাওয়া য়ায়। এটি সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে।
এই এলসি গুলো ব্যবহারে উপযোগী নয়। এটি অফিসার্সদের জন্য নির্মিত ভবনে ব্যবহার করলে দূর্ঘটনা হতে পারে। যা ব্যবহারে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই এলসিগুলো কেনার জন্য আগে থেকে প্রজ্ঞাপনা শর্ত ছিল খুই ভালোমানের এলসি হতে হবে। সেক্ষত্রে আমেরিকান ব্র্যান্ড দানাম বুশ অন্যতম হতে পারে।
এমনতাবস্থায় আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ট সাবেক নারী এমপির মেয়ের জামাতা মোহাম্মদ আতিককে দ্রুত এই প্রোডাক্ট সাপ্লাই থেকে বিরত রাখা এবং এলসি বাতিল না করা হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ঝুঁকি হতে পারে।
তাছাড়াও আওয়ামী সরকারের সহযোগিতাকারী এই দুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অ্যাসোসিয়েটস, গ্রিনটেককে সকলধারণের সরকারি স্থাপনার কাজ থেকে সরানো দরকার এমন দাবি করছেন অনেকেই।