গেলো জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে আগস্টের ১৫ তারিখ পর্যন্ত শিক্ষার্থী আন্দোলনে হত্যার ঘটনা থেকে শুরু করে যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত করবে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের তদন্তকারী দলকে সর্বাত্মক সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা সামদাসানি প্রচারিত সংবাদ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জাতিসংঘের একটি দল বাংলাদেশে সংগঠিত মানবাধিকার বিরোধী এসব কর্মকাণ্ডের তদন্তে নিযুক্ত হবে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তথ্যানুসন্ধানের জন্য জাতিসংঘের কাছে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ-সংক্রান্ত অনুরোধ জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ককে চিঠি দিয়েছেন।
তার পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিক্ষোভের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও নিপীড়নের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি, মূল কারণ বিশ্লেষণ এবং ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য সুপারিশ করবে তদন্তকারী দলটি।
এর আগে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দল ২২-২৯ আগস্ট বাংলাদেশ সফর করে। দলটি সফরকালে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের ছাত্র প্রতিনিধি যারা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আটক বা আহত হয়েছেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক দল, সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনুরোধে প্রতিনিধি দলটি সাম্প্রতিক সহিংসতা ও অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন বৈঠকে আলোচনা হয়েছে এবং আগামীতে তদন্তকাজে জাতিসংঘকে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে হাইকমিশন।
বাংলাদেশের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জনগণকে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত করতে, জবাবদিহিতা ও সমন্বয় চাইতে এবং বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য মানবাধিকারকে সমুন্নত করতে সহায়তা করার প্রত্যাশা করছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দফতর।