Published : Tuesday, 27 August, 2024 at 10:16 PM, Update: 27.08.2024 10:20:37 PM
জান্তা সরকারের বাহিনীগুলোর সঙ্গে চরম রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিংহভাগ এলাকা দখল করে নিয়েছে সশস্ত্র আরাকান আর্মির সদস্যরা। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা ১০ লাখেরও বেশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত রাখাইনে আরাকান আর্মির কর্তৃত্ব স্থাপন হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, ২০২৩ সালের শেষের দিকে রাখাইন রাজ্যের দখল নেয়ার লক্ষ্যে আরাকান আর্মি পুনরায় লড়াই শুরুর পর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে একটি প্রোটো-রাষ্ট্র (আধা রাষ্ট্র) তৈরির প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
'যদিও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হামলা ও অবরোধের মোকাবিলা করতে হচ্ছে, যা ওই এলাকায় বিশাল অর্থনৈতিক দুরবস্থা সৃষ্টি করছে; তারপরও রাখাইনে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠদের থেকে সমর্থন পেয়ে আরাকান আর্মি উত্তরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে,' বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
এদিকে মিয়ানমারের জান্তা সরকার আরাকান আর্মির মোকাবিলায় এখন মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা বেসামরিক মানুষ। তবে এলাকাগুলোর দখল ধরে রাখতে এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে মরিয়া জান্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের দোসর হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে এবং রাখাইনের বাড়িঘর ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছে।
'আরাকান আর্মি সম্ভবত রাখাইন রাজ্যের ডি ফ্যাক্টো গভর্নিং অথরিটি হিসেবে আবির্ভূত হবে এবং দেশের বাইরের কর্তৃপক্ষদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, কীভাবে এর সঙ্গে যুক্ত হবে অথবা আদৌ যুক্ত হবে কিনা,' উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
আইসিজি মনে করছে, আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের শাসনভার গ্রহণ করলে যে আধা রাষ্ট্র সৃষ্টি হবে, দীর্ঘ সংঘাত ও আর্থিক দুরবস্থার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা মানবিক সংকটে পড়বে।
তাই আরাকান আর্মিদের স্বাধীন তদন্ত সমর্থন করা এবং ঢাকা ও দাতা গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থিতিশীলতা বাড়ানোর জন্য, আরাকান সেনাবাহিনীর উচিত রোহিঙ্গাদের সাথে সম্পর্ক সংশোধন করা, অভিযুক্ত নির্যাতনের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্তকে সমর্থন করা এবং ঢাকা ও দাতাদের কাছে পৌঁছানো; যাদের উচিত এই গ্রুপের সাথে যৌথভাবে মানবিক ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে কাজ করার উপায় খুঁজে বের করা।