নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। লোকালয়ে বাড়ছে পানি। ঘরবাড়িতে পানি থাকায় এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে আছে মানুষ। তবে খাবার সংকট রয়েছে। বিশেষ করে দুর্গম গ্রামীণ এলাকা যেখানে নৌকা ছাড়া যোগাযোগ করা যায় না সেখানে কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে জানা গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় জেলা শহরের মাইজদীসহ আটটি উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতায় পানি বেড়েছে। জেলার সদর, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ ও মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে অনেক এলাকায়। অনেক কাঁচা বাড়িঘর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ইতোমধ্যে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো থেকে যে পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। নৌকার সংকটে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বন্যায় নোয়াখালীতে এখন পর্যন্ত পানিতে ডুবে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, বিশুদ্ধ খাবারপানির সংকটে নোয়াখালীতে পানিবাহিত রোগের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন ১৫০ জনের বেশি মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পাশাপাশি সাপে কাটা রোগীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও অ্যান্টিভেনমেরও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলার এক হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে মানুষের ভিড়। পানিবন্দি আছেন জেলার আট উপজেলার ২০ লাখ মানুষ।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, চলমান বন্যায় নোয়াখালীর পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। বেড়ে চলেছে পানি। বৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে উজানের পানি। বিভিন্ন স্থানে খাদ্যের সংকটের খবর পেয়েছি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী প্রতিদিনই পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।