৯ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধে গেলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সেখান থেকে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে বলে জানা যায়।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে কয়েকশো শিক্ষার্থীর একটি মিছিল নগরীর নিরালা মোড়, ময়লাপোতা মোড় হয়ে রয়েল মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি ময়লা পোতা মোড়ে পুলিশের বাধার মুখ পড়ে। সেখান থেকে পুলিশকে উপেক্ষা করে সাতরাস্তা মোড়ে বিএমএ (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন) ভবনের সামনে এলে আবার পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
এরপর শিক্ষার্থীরা বিএমএ'র সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে পুলিশ তাদের উঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে ধাওয়া-পাল্টা দেয়া শুরু হয়। একসময় পুলিশি বাধায় শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে উঠে যান এবং সাত রাস্তার বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নেন।
এর আগে, পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে নগরীর রয়েল মোড় এলাকায় শিক্ষার্থীদের জড়ো হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশের অতিরিক্ত কড়াকড়ির ফলে শিক্ষার্থীরা রয়েল মোড়ের আশেপাশে ভিড়তে পারেননি। শিক্ষার্থী মনে হলেই পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সেখান থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমেস্ট্রি'২০ ব্যাচের তানজীম তালহাসহ অন্তত ১৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে 'মার্চ ফর জাস্টিস' কর্মসূচি ঘিরে খুলনার রয়েল মোড়, ময়লাপোতা মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন খান বলেন, আমদের ঘোষণা দেয়া ছিল আর কোনো ছাত্রকে আন্দোলন করতে দেয়া হবে না। তারা আইন নিজেদের হাতে নিয়েছে। আমাদের ওপর হামলা করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা নগরীর রয়েল মোড়ে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ রয়েল মোড় ও আশপাশের এলাকা থেকে কমপক্ষে ৩৫ জনকে আটক করে। পুলিশ ও বিজিবির কঠোর অবস্থানের কারণে আন্দোলনকারীরা রয়েল মোড়ে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। এছাড়া নগরীর শিববাড়ী মোড়েও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়েছে। কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা মঙ্গলবার রাতে খুলনা সার্কিট হাউসে বৈঠকের পর আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। কিন্তু কিছু সংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল যুবক বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।