জামায়াত ও শিবিরকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট ১৪ দলের বৈঠকে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে১৪ দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গণভবনে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক শুরু হয়।
কাদের বলেন, ১৪ দলের নেতারা মনে করেন, বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল ও শিবির তাদের দোসর জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই ১৪ দলের নেতারা সর্বসম্মতিক্রমে জামায়াত ও শিবিরকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধে একমত হয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে দেশের জনগণের মধ্যে পরিপূর্ণ স্বস্তি আনার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সামরিক বাহিনীর অগ্রণী ভূমিকার জন্য বৈঠকে ধন্যবাদ জানানো হয় বলেও জানান কাদের।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন,আমরা ২০১৩-১৪ সালেই প্রস্তাব করেছিলাম জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করতে। আর সময়ক্ষেপণ না করে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, সরকার এটাকে বাস্তবায়ন করবে। আশা করি, ২/১ দিনের মধ্যে সরকার ব্যবস্থা নেবে। আর যাতে জঙ্গি উত্থান না ঘটে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, জামায়াত-শিবির রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। রাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ এখনও বন্ধ করেনি তারা। আমরা তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রস্তাব দিয়েছি। আশা করি, সরকার প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, রাজনীতিতে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটা ঐতিহাসিক।
এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত সরকার দ্রুত বাস্তবায়ন করবে।
বৈঠকে ১৪ দলের অংশীদার বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হলে তারা আর সংবাদ সম্মেলন কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে পারবে না।
এর আগে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জামায়াত-শিবির-বিএনপির জঙ্গিরা আজকে আমাদের ওপর থাবা দিয়েছে। এখানে ঐ শিবির, ছাত্রদল, বিএনপি-জামায়াত এরাই কিন্তু এবং জঙ্গি এরা। এই জঙ্গিরাই কিন্তু আজকে আমাদের ওপর থাবা দিয়েছে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এদের উদ্দেশ্যটা এখন বোঝা যাচ্ছে যে কোটা কোনো ইস্যু না। একে একে যে কয়টা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সেবা দেয়, যে কয়টা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করে, সেটাই ধ্বংস করা। অর্থাৎ বাংলাদেশটাকেই যেন ধ্বংস করে ফেলা।