আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ের মধ্যেই ফের এ নিয়ে নিজের শক্ত অবস্থানের কথা জানান দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভোটে লড়বেন এবং জয়ীও হবেন বলে দাবি তার।
শুক্রবার (১২ জুলাই) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েটের এক নির্বাচনী প্রচারসভায় বাইডেন ওই প্রসঙ্গ তোলেন বলে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, আমিই মনোনীত প্রার্থী। আমি কোথাও যাচ্ছি না। নির্বাচনে আমি থাকছি, আর আমিই জিতবো। রাজনীতির প্রতি বিনোদন বা রিয়্যালিটি টিভি শো–র মতো আচরণ বন্ধ করার উপযুক্ত সময়। এটাই।
নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নাকি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনই লড়বেন তা নিয়ে নানা বির্তকের মধ্যে আগের দিন বৃহস্পতিবারও প্রায় একই কথা বলেন বাইডেন। ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে যোগ্য প্রার্থী আমিই। জরিপের অস্তিত্ব নেই। আমি মনে করি আমি জানি, আমি বিশ্বাস করি আমি সবচেয়ে যোগ্য। আমি নির্বাচনে লড়ছি।
গত ২৭ জুন টিভি বিতর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ধরাশায়ী হওয়ার পর ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর যখন চাপ বাড়ছে, হ্যারিস তখন বেশ জোরালোভাবে আলোচনায় এসেছেন।
একাধিক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বাইডেনকে যদি সরে দাঁড়াতে হয়, অর্থাৎ যে কোনো উপায়েই যদি তিনি ভোটে লড়ার যোগ্য বলে বিবেচিত না হন, তখন তার উত্তরসূরী হিসেবে ট্রাম্পের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন হ্যারিস।
তবে বারবারই বাইডেন বলে আসছেন, নভেম্বরে হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনিই লড়বেন। কিন্তু ভিন্ন সুর দলের দাতাদের। ট্রাম্পকে ফের ক্ষমতার বাইরে রাখতে বাইডেনের চেয়ে কমলা হ্যারিসের সফলতার সম্ভাবনা বেশি কিনা, সে প্রশ্ন তাদের মনে।
৫৯ বছর বয়সী কমলা হ্যারিস যদি দলের মনোনয়ন পেয়ে আসন্ন ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, তবে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।
গত ২ জুলাই সিএনএনের প্রকাশ করা এক জরিপ বলছে, ভোটাররা ট্রাম্পকে ৬ শতাংশ এগিয়ে রেখেছেন। ট্রাম্পকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন ৪৯ শতাংশ ভোটার, যেখানে বাইডেনের পক্ষে সমর্থন এসেছে ৪৩ শতাংশ। হ্যারিস ৪৭ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন, ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৫ শতাংশ সমর্থন।
সাম্প্রতিক টেলিভশন বিতর্কের পর রয়টার্সের করা এক জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের বিপক্ষে বাইডেন ও হ্যারিসের অবস্থান প্রায় কাছাকাছি। হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন ৪২ শতাংশ, আর বাইডেনের জন্য সমর্থন ৪৩ শতাংশের।
টেলিভিশন বিতর্কের পর বাইডেনের ক্যাম্পেইনিংয়ে প্রকাশ করা অভ্যন্তরীণ জরিপে ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেনের প্রতিদ্বিন্দ্বিতার যে ইঙ্গিত মিলেছে, প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে হ্যারিসের ক্ষেত্রেও। জরিপে অংশ নেওয়া ১০০ জনের মধ্যে ৪৫ জন বলেছেন, তারা ভোট দেবেন হ্যারিসকে, ৪৮ জন ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
ভোটের লড়াই থেকে ৮১ বছর বয়সী বাইডেন সরে গেলে সে ক্ষেত্রে কমলা হ্যারিসই সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বলে মনে করেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাবশালী নেতারা।