শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বেরিলের দাপটে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ৮ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বন্ধ হয়ে গেছে বহু রাস্তা। ঝড়ের পর প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবিত একাধিক হাইওয়ে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলের ২৭ লাখের বেশি ঘরবাড়ি। বাতিল করা হয়েছে ১৩শর বেশি ফ্লাইট।
স্থানীয় সময় সোমবার (৮ জুলাই) ভোরে ভারি বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসের সঙ্গে টেক্সাসের উপকূলীয় শহরে আঘাত হানে বেরিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, জ্যামাইকা ও মেক্সিকোতে আঘাত হানার পর হারিকেন বেরিল আছড়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে। সোমবার ভোরে ভারি বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসের সঙ্গে টেক্সাসের উপকূলীয় শহর মাটাগোর্ডার কাছে ১৩০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে হারিকেনটি।
টেক্সাসের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বেরিলের তাণ্ডবে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলের ২৭ লাখের বেশি ঘরবাড়ি। উপড়ে গেছে বেশ কয়েকটি এলাকার গাছপালা। ঝড়ের প্রভাবে বিপর্যস্ত জনজীবন। অচল হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। বাতিল করা হয়েছে টেক্সাসের প্রায় দেড় হাজার ফ্লাইট।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি বেড়ে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে শহরের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট। গাড়ির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে সড়কের মাঝেই অচল হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি গাড়ি, জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, হারিকেনটি টেক্সাসে আঘাত হানার পরপরই দুর্বল হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিচ্ছে। যার প্রভাবে আগামী কয়েকদিন ভারি বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে শহরটিতে বন্যাও দেখা দিতে পারে বলে আগাম সতর্কতা জারি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
জ্বালানি ও গ্যাস উত্তোলনে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় অঙ্গরাজ্য টেক্সাস। বেরিলের প্রভাবে সেখানে জ্বালানি তেল পরিশোধন ধীর হয়ে পড়েছে। কিছু উৎপাদনকেন্দ্র থেকে লোকজন সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
টেক্সাস পাবলিক ইউটিলিটি কমিশনের চেয়ার থমাস গ্লিসন বলেন, উদ্ধারকর্মীরা এখনো উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি। এখনো তীব্র ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বিদ্যুৎ–সংযোগ ঠিক হতে আরও কয়েক দিন সময় লেগে যেতে পারে।
টেক্সাসের জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান নিম কিড বলেন, জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজে অংশ নিতে অঙ্গরাজ্যজুড়ে আড়াই হাজারের বেশি মানুষকে নিয়োগ করা হয়েছে।
বাইডেন প্রশাসন জানায়, কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এফইএমএ) ও যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের সদস্যরা তল্লাশি ও উদ্ধারকাজে সহায়তা করছেন। এ ছাড়া খাবার, পানি ও জেনারেটর নিয়ে প্রস্তুত আছে এফইএমএ।