Published : Saturday, 6 July, 2024 at 6:27 PM, Update: 06.07.2024 6:36:03 PM
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২৪ কাঠা জমির উপর ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের ডুপ্লেক্স বাড়িটি দুদকের সহযোগিতায় জব্দ ও সিলগালা করেছে জেলা প্রশাসন।
শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালতের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) সমন্বয়ে গঠিত টিম রূপগঞ্জের আনন্দ হাউজিং এলাকায় অবস্থিত বাড়িটি জব্দ করে।
এ সময় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ছাড়াও দুদকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সবশেষ ২১ দিনের সময় দিয়ে বেনজীর ও তার পরিবারের কাছে সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি করে দুদক। পরপর দুই দফা তলব করলেও বেনজীর ও পরিবারের কেউ দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের উপ পরিচালক মাইনুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশশাসকের এডিসি রাজস্ব শফিকুল আলমের নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা আহসান মাহমুদ রাসেল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিমন সরকারসহ উপজেলা ভূমি অফিস অভিযানে অংশ নেয়। প্রথমে তারা ভবনটি প্রবেশ গেটে সম্পত্তি ক্রোকের একটি সাইবোর্ড সাটিয়ে দেন। পরে পুরো ভবনটি পরিদর্শন করে ভবনটির দুইটি দরজায় সিলগালা করে দেন।
এব্যাপারে দুদকের উপ পরিচালক বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরাসহ জেলা প্রশাসক আজকে বেনজীর আহমেদের মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীরের নামে ২৪ কাঠার জমির ওপর নির্মিত ডুপ্লেক্স ভবনটি দখলে নিয়েছি। এখানে নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।
স্থানীয়রা জানান, বেনজীর আহমেদ প্রায় আট বছর আগে এলাকার প্রয়াত প্রেমানন্দ সরকারের সন্তানদের কাছ থেকে এক কোটি ৮৩ লাখ টাকায় এই জায়গাটি কিনে নেন। এরপর ২০২২ সালের দিকে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। বেনজীর আহমেদ মাঝেমধ্যেই এ বাড়িতে আসতেন, রাত্রিযাপনও করতেন। বাড়ির নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক কেয়ারটেকার এবং পাশাপাশি দুটি কুকুরও রাখা ছিল।
এদিকে সূত্র জানায়, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ জুন আদালত তৃতীয় দফায় বেনজীরের আরও বিপুল সম্পদ জব্দ করেছে। সে তালিকায় এ বাংলোটিও ছিল। এরপর বাড়িটি দেখভালের জন্য জেলা প্রশাসককে রিসিভার নিয়োগ দেয় আদালত।
এর আগে গোপালগঞ্জে বিশাল এলাকাজুড়ে রিসোর্ট, রাজধানীর গুলশানে ১০ হাজার বর্গফুটের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট (চারটি ফ্ল্যাট একসঙ্গে), বান্দরবানে ২৫ একর বাগানবাড়িতে রিসিভার নিয়োগ দিয়ে বেনজীরের সম্পত্তি তত্ত্বাবধানে নেয় প্রশাসন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদিনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৮ এপ্রিল অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অনুসন্ধান শুরু হলে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশত্যাগ করেন বেনজীর।