এক মাসের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে তৃতীয় দফা বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার সীমান্তবর্তী চার উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ঢল অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টিতে সিলেট নগরেরও অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনও বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর সিলেট শহরে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো জানায়, পানি কমেছে গোয়াইনঘাট, কোম্পানিগঞ্জ ও জাফলংয়ের বিভিন্ন নদীতে। কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহীত হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসকের তথ্যমতে, জেলার ১৩ উপজেলায় ৯৭টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত। বন্যায় আক্রান্ত এক হাজার ১৭৬টি গ্রামের ৭ লাখ ১৬ হাজার ৫৮ মানুষ। জেলার ৬৫৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত আট হাজার ৩৫১ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
এর আগে সিলেটের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমীর হোসেন জানিয়েছিলেন, সড়ক ও জনপদের ৫৪৩ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রথম দফায় ৩৮ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, দ্বিতীয় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩৯.৪ কিলোমিটার রাস্তা।
সুরমা-কুশিয়ারা নদীতে পলি জমে গভীরতা কমে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যার ভয়াবহতাও এবার বেড়েছে। পানি নিষ্কাসনের প্রাকৃতিক উৎসগুলো বিলীন হওয়ায় এই সমস্যা আরও বাড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার বলেছেন, আমরা প্রায় ২০টা নদী খননের পরিকল্পনা করছি।
যেভাবে হাওর ও শহরে উন্নয়ন করে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে তাতে ভবিষ্যতে সিলেট অঞ্চলের বন্যা নতুন শঙ্কার কারণ হতে পারে।