Published : Monday, 1 July, 2024 at 8:48 PM, Update: 01.07.2024 8:53:46 PM
নানা অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ ও মামলার রায়ে দণ্ডিত হয়ে বিশ্বের ৩১টি দেশের কারাগারে ১১ হাজার ৪৫০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক ও প্রবাসী কারাবন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্দি রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের কারাগারে।
সোমবার (০১ জুলাই) জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি বন্দী সবচেয়ে বেশি আটক রয়েছেন সৌদি আরবে, ৫ হাজার ৭৪৬ জন। প্রতিবেশী ভারতে আটক আছেন ১ হাজার ৫৭৯ জন। অন্য দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কে ৫০৮ জন, ওমানে ৪২০ জন, কাতারে ৪১৫ জন, গ্রিসে ৪১৪ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৪০৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩৮৫ জন ও মিয়ানমারের কারাগারের ৩৫৮ জন বাংলাদেশি আটক আছেন।
এর বাইরে মালয়েশিয়ায় ২১৯ জন, ইরাকে ২১৭ জন, চীনে ১৯১ জন, হংকংয়ে ১২২ জন, জর্ডানে ১০০ জন, ইতালিতে ৮১ জন, মালদ্বীপে ৭০ জন, সিঙ্গাপুরে ৬৬ জন, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৯ জন, লেবাননে ২৮ জন, স্পেনে ১৯ জন, ব্রুনেইতে ১৬ জন বাংলাদেশি আটক আছেন। এ ছাড়া ২ থেকে ১০ বাংলাদেশি আটক রয়েছেন জাপান, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, মোজাম্বিক, থাইল্যান্ড, আলজেরিয়া, লিবিয়া, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ কোরিয়া ও মিসরের কারাগারে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কখনো শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেয়নি। জিএসপি (অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা) সুবিধার সময়েও গার্মেন্ট পণ্য এর আওতাবহির্ভূত ছিল। এ সুবিধা ছাড়াই উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানির একক বৃহত্তম বাজারে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি এবং গার্মেন্ট পণ্যকেও জিএসপির আওতায় আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কোনো বিশেষ আঞ্চলিক চুক্তি বা সহায়তা কার্যক্রম ছাড়া কোনো দেশই যুক্তরাষ্ট্রে গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের সুবিবেচনার প্রত্যাশা
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, র্যাবের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ক্রমাগত প্রতিবাদ করে আসছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। র্যাবের বিরুদ্ধে আনীত কথিত অভিযোগগুলোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের কাছে পদ্ধতিগতভাবে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও বিধিগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুবিবেচনা আশা করছে।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব এবং এই বাহিনীর সাতজন কর্মকর্তার ওপর ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার এবং রেমিট্যান্সের প্রধান উৎস পশ্চিম এশিয়া। সরকারের গত দেড় দশকের নিরলস প্রচেষ্টায় ২০০৯ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমশক্তি রপ্তানি দ্বিগুণ হয়েছে। ৬০ শতাংশ রেমিট্যান্সের (প্রবাসী আয়) উৎস এই অঞ্চল। সেখানে নিয়োজিত বাংলাদেশি কর্মীদের প্রায় ৬০ শতাংশ আধা দক্ষ ও অদক্ষ।