Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ ছাত্র হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি ■ পুলিশ গাড়িতে ওপর আন্দোলনকারীদের হামলা ■ নির্মাণাধীন ভবন ধসে ৩ জনের মৃত্যু ■ বঙ্গভবনের সামনে দুই শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ■ তিনদিনের ব্যবধানে আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম ■ বঙ্গভবনের সামনে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ■ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দুই উপদেষ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
এবারের জি-৭ সম্মেলন ও একটি পর্যালোচনা
Published : Thursday, 27 June, 2024 at 11:06 PM

জি-৭ সম্মেলন

জি-৭ সম্মেলন

শনিবার (১৫ জুন) ছিল ইউরোপীয় দেশ ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর পুলিয়ার একটি বিলাসবহুল রিসোর্টে অনুষ্ঠিত বিশ্বের শিল্পোন্নত সাত দেশের সংগঠন জি-৭ নেতাদের তিন দিনের শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন। সম্মেলনে ইউক্রেনের জন্য আর্থিক সহায়তা, গাজা যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, ইরান, লোহিত সাগরের পরিস্থিতি, লিঙ্গসমতা, চীনের শিল্পনীতি এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার মতো অন্যান্য প্রধান বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।

সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলত্জ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এবং পোপ ফ্রান্সিস এতে অংশ নিয়েছেন।

সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকের জন্য ১০টির বেশি দেশের নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইতালি। তাদের মধ্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা অন্যতম। তবে মিসর ও সৌদি আরবের কোনো প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না।

সম্মেলনে জি-৭ জোটভুক্ত সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও জাপানের নেতারা অভিবাসন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দিকে তাঁদের মনোযোগ দেন। তাঁরা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য তাঁদের দৃঢ়সংকল্পের ওপর জোর দিয়ে বলেন, এটি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
জি-৭ সম্মেলন

জি-৭ সম্মেলন


এর আগে বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য লড়াই এড়িয়ে কীভাবে তাদের শিল্পকারখানা রক্ষা করা যায়, সেদিকেই তারা মূলত গুরুত্ব দেওয়ার কথা আলোচনা করেন।

উন্নত দেশগুলোর এই সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্কে একধরনের টানাপোড়েন চলছে। চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) চীনের তৈরি ইলেকট্রিক গাড়িতে নতুন করে ৩৮ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও জি–৭-এর অনানুষ্ঠানিক অষ্টম সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) চীনের তথাকথিত ‘শিল্পায়নে অতিরিক্ত সামর্থ্য’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, শিল্পায়নে বিশেষ করে সৌরবিদ্যুৎ ও ইলেকট্রিক গাড়ির মতো সবুজ জ্বালানি ও প্রযুক্তিতে বেইজিংয়ের উদার ভর্তুকির কারণে সে দেশের পণ্য অতিমাত্রায় সস্তা, যা ব্যাপকভাবে বিশ্ববাজার দখল করে নিয়েছে।

ওয়াশিংটন অভিযোগ তুলেছে, বেইজিং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পকে সহায়তা করছে। আর সেই শিল্পে তৈরি অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। যৌথভাবে দুই দেশ ড্রোন তৈরি করছে। এ ছাড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির জন্য রাশিয়ায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রপ্তানি করছে চীন।

জি–৭ নেতারা এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেন। দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলোতে চীনের মুখোমুখি অবস্থান ও সামরিকায়ন এবং তাইওয়ানে তাদের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা ওই অঞ্চলে সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
জি-৭ সম্মেলন

জি-৭ সম্মেলন


সম্মেলনে পোপ ফ্রান্সিস জি-৭ সম্মেলনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কথা বলেন। এ ছাড়া জি-৭-এর নেতারা চীনের ক্ষতিকর ব্যবসা চর্চা মোকাবিলা নিয়েও আলোচনা করেছেন।

হুইলচেয়ারে করে পোপ সম্মেলনে এলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হ্যাভিয়ের মিলেসহ অনেকেই উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করে পোপ বলেন, এটি উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং জ্ঞান অর্জনের সুযোগের প্রসার ঘটাতে পারে। একই সময় উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বৈষম্য করতে পারে।

জি-৭ সম্মেলনে নেতারা অভিবাসন নিয়েও আলোচনা করেন। আফ্রিকা থেকে অবৈধ অভিবাসী ইউরোপে ঢোকা বন্ধ করার বিষয়ে জোর দেন মেলোনি। এ জোটের দেশগুলোর পক্ষ থেকে মানব পাচার রোধে একযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, অবৈধ অভিবাসন বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জি-৭ সম্মেলন

জি-৭ সম্মেলন


সম্মেলনে ইউক্রেনকে পাঁচ হাজার কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছেন জি-৭ এর নেতারা। এসব দেশে স্থগিত করা রুশ সম্পদের মুনাফা থেকে চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই ঋণ দেওয়া হবে বলে জানান তারা।

সম্মেলনের প্রথম দিন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে জি-৭ এর সদস্য না হয়েও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বৈঠকে জোটটির সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও আয়োজক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিসহ ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, জাপান, যুক্তরাজ্যের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন জোটটির অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কর্মকর্তারাও।

বৈঠক শেষে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ইউক্রেনকে অতিরিক্ত প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা দিতে আমরা রাজনৈতিকভাবে সম্মত হয়েছি।

সহায়তা দেওয়ায় উপস্থিত সব দেশের নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে জেলেনস্কি বলেন, এই বৈঠক থেকে ইউক্রেনের ‘প্রতিরক্ষা ও পুনর্গঠনের’ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হবে। তা ছাড়া তাঁর দেশের আরও অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জোর দেন জেলেনস্কি।

ঋণের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, এই ঋণ প্যাকেজে জি-৭ এর প্রতিটি দেশ অবদান রাখবে। এই ঋণের বিষয়ে বিস্তারিত বিষয় চূড়ান্ত করতে এখন জোটটির অর্থমন্ত্রীরা কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, এখন পরবর্তী ধাপ হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ঋণ বাস্তবায়নের জন্য কারিগরি দিকগুলো চূড়ান্ত করা। এ ছাড়া ইউক্রেনকে এত বড় ঋণ দেওয়ার ঘোষণার মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি জি-৭ এর নেতাদের ‘ঐক্য ও সংকল্পের’ স্পষ্ট বার্তা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাঁখো বলেন, এখন আমাদের অর্থমন্ত্রীরা বসবেন। তাঁরা চুক্তির খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করবেন।

অন্যদিকে জি-৭ এর শীর্ষ সম্মেলনের এক পার্শ্ব বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দুই দেশের মধ্যে ১০ বছর মেয়াদি একটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই দ্বিপক্ষীয় চুক্তি রুশ হামলা মোকাবিলায় ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে চুক্তিপত্রে।
জি-৭ সম্মেলন

জি-৭ সম্মেলন


মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা শুক্রবার ইতালি ছেড়ে যান। শনিবার ছিল সম্মেলনের শেষ দিন। সম্মেলনে থাকা অন্য নেতাদের জন্য এদিন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সুযোগ রাখা হয়।

এই সম্মেলনটি এমন সময় অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেই নির্বাচনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন ঋষি সুনাক, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জো বাইডেনসহ বেশ কয়েকজন নেতা।

জি-৭-এর পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো ‘গ্রুপ অব সেভেন’ বা সাতটি দেশের দল। বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির সাতটি বড় দেশ ও একটি সংস্থা নিয়ে এই জোট গঠিত। জোটের সদস্যদেশ হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই জোটের একটি অংশ। রাশিয়া ১৯৯৭ সালে এই জোটে যোগ দিলে সেটা জি-৮ হয়েছিল। তবে ক্রিমিয়া দখল করার কারণে ২০১৪ সালে রাশিয়া বাদ পড়ে যায়। এরপর রাশিয়া আর জি-৭-এ যোগ দেয়নি। চীন একটি বড় অর্থনীতি এবং বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হওয়া সত্ত্বেও তারা এই জোটের সদস্য নয়। কোনো দেশে মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম থাকলে ওই দেশকে জি-৭-ভুক্ত দেশগুলোর মতো উন্নত অর্থনীতি হিসেবে দেখা হয় না।

এ সম্মেলনে নিজ দেশের সমস্যার বাইরেও রাষ্ট্রপ্রধানরা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রতিবছর জি-৭-এর একটি সদস্য দেশ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক এবং বছরব্যাপী সভাপতিত্বের জন্য দায়িত্ব নেয়। গত বছর ৪৯তম সম্মেলনের আয়োজক ছিল জাপান। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই তার প্রথম আন্তর্জাতিক ফোরাম আয়োজন।

দেশসংবাদ/এমএম/এমএইচ


আপনার মতামত দিন
শান্তিতে নোবেল জিতলো জাপানি সংস্থা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Friday, 11 October, 2024
বৈশিক ক্ষুধা সূচকে ৩ ধাপ পেছাল বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Friday, 11 October, 2024
রসায়নে যৌথভাবে নোবেল পেলেন তিন জন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Wednesday, 9 October, 2024
চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Monday, 7 October, 2024
নাটকের সংলাপ নকল করে জাতিসংঘে ভাষণ!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Saturday, 5 October, 2024
শান্তিতে নোবেল পাচ্ছেন এন্তোনিও গুতেরেস!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Friday, 4 October, 2024
জাতিসংঘ মহাসচিবকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Wednesday, 2 October, 2024
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক
এফ. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up