Published : Wednesday, 26 June, 2024 at 7:22 PM, Update: 27.06.2024 8:06:51 PM
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
বুধবার (২৬ জুন) দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক আযমের নেতৃত্বে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। মোবাইল উদ্ধারে পুকুরে নামানো হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও পেশাদার জেলেদের। সঙ্গে ফেলা হচ্ছে মাছ ধরার জাল।
শহরের পিপীলিকা মার্কেটের পাশের ডোবা ও স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশের পুকুরে এই অভিযান শুরু হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে অভিযানের ছিল ঝিনাইদহ জেলা ও গোয়েন্দা পুলিশ।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক গ্যাস বাবু বাবু আদালতে জবানবন্দিতে স্বীকার করেছিলেন যে, আনার হত্যাকাণ্ডের পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর নির্দেশে মোবাইল দুটি ফেলে দেন তিনি।
গোয়েন্দাদের ধারণা, মোবাইলগুলো উদ্ধার করা গেলে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা রহস্যের অনেক তথ্যাদি মিলবে। কারণ, ওইসব মোবাইল থেকেই গ্যাস বাবু আনার হত্যার অন্যতম অভিযুক্ত চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়া ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
এর আগে গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, গ্যাস বাবুকে সঙ্গে নিয়ে আলামত উদ্ধারের জোর চেষ্টা চালানো হবে।
তবে আলামতগুলো যাতে কেউ সরিয়ে ফেলতে না পারে সেজন্য আগে থেকেই গোয়েন্দাদের তরফ থেকে স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করা হয়। সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে নজরদারি বাড়ার জেলা পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় গ্যাস বাবু জানিয়েছিলেন, তার মোবাইলগুলো হারিয়ে গেছে। এজন্য তিনি জিডিও করেন। কিন্তু আদালতে জবানবন্দিতে সেগুলো মিন্টুর নির্দেশে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন।
হারুন বলেন, এই মোবাইলগুলো দিয়েই আনার হত্যার মূল ঘাতক আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া গ্যাস বাবুর সঙ্গে অসংখ্যবার কথা বলেছেন। এছাড়া অসংখ্য মেসেজ তারা আদান-প্রদান করেছেন। মোবাইলগুলোতে ডিজিটাল তথ্য-উপাত্ত আছে বলে মনে করছি। না হলে গ্যাস বাবু মোবাইলগুলো পানিতে ফেলে দেবেন কেন?
গত ১২ মে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরেরদিন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার।
.
এরপর ২২ মে সকালের দিকে তার খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ বলছে, কলকাতার উপকণ্ঠে নিউটাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জীবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়।
খুনের আলামত মুছে ফেলতে দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। এরপর সুটকেস ও পলিথিনে ভরে ফেলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। তবে এই সংসদ সদস্যের মরদেহ বা দেহাংশ এখনও মেলেনি।
এই ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুকেও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলায় শিমুল ভূইঁয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূইঁয়া ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভূইঁয়া ও শিলাস্তি রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ড শেষে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে। ভারতের কাছে শাহীন মোস্ট ওয়ান্টেড। শাহীনকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত চেষ্টা করবে।