Desh Sangbad
Desh Sangbad
শিরোনাম: ■ শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ■ ইসরায়েলি হামলায় গাজা আরো ১১৫ ফিলিস্তিনির মৃত্যু ■ দ্বিতীয় দফা লেবানন থেকে ফিরছেন ৬৫ বাংলাদেশি ■ হঠাৎ খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ■ প্রধান উপদেষ্টার মেডিকেল টিম নিয়ে গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ ■ যে কারণে বাংলাদেশকে ৩৩ লাখ ডলার দেবে জাপান ■ বুধবার রাজধানীতে যেখানে যাবেন না
কে বসছে দিল্লির মসনদে?
Published : Wednesday, 5 June, 2024 at 1:12 PM, Update: 05.06.2024 1:32:18 PM

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী

টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র ঐতিহাসিক বিজয় দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটও সরকার গঠনে তৎপর হয়ে উঠেছে। ফলে শতভাগ নিশ্চিত করে বলা যায় না- নরেন্দ্র মোদিই সরকার গঠন করবেন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট যদি বিজেপি’র কোন শরীককে বাগিয়ে এনে সরকার গঠন করে তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

মঙ্গলবার (৪ জুন)  ভোট গণনা শেষে জানা যায়, মোট ৫৪৩ আসনের মধ্যে সরকার গঠন করতে প্রয়োজনীয় ২৭২ আসনের দৌড়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯৩, ইন্ডিয়া জোট ২৩৩ এবং অন্যান্য ১৮। তারমধ্যে এককভাবে বিজেপি ২৪০ আর কংগ্রেস ৯৯।

অর্থ্যাৎ সরকার গঠনের জন্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোন দলই। এ জন্য যে নতুন পার্লামেন্ট হবে তা হবে ঝুলন্ত। অর্থাৎ জোটকে প্রাধান্য দিয়ে সরকার গঠন করতে হবে। যেহেতু বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি, তাই এই সুযোগ নিতে পারে বিরোধী দল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট। জোটবিহীন ১৮ এমপির মধ্যে ওয়াইএসআরসিপি এবং স্বতন্ত্র আছেন চারজন। তাদেরকে সঙ্গে নিতে পারলে এবং যদি এনডিএর সঙ্গী জেডিইউ এবং টিডিপিকে সঙ্গে নিতে পারে, তাহলে সরকার গঠনের দিকে এগুতে পারে ইন্ডিয়া জোট। এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। ফলে এই অবস্থায় ভারতে সরকার গঠন নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে এনডিএ এবং ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে।

এবার লোকসভা নির্বাচনে বুথফেরত জরিপকে মিথ্যা প্রমাণ করে বিস্ময়কর ফল করেছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। বুথফেরত জরিপ তাদেরকে দিয়েছিল ১৫২টির মতো আসন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গতকাল তারা ২৩৩ আসনে জিতেছে। এই আসনগুলোর সঙ্গে আরও কিছু আসন যোগ হলে তারাও সরকার গঠনের ডাক দিতে পারে। এ জন্য গতকালই এনডিএ জোটের ছোট দলগুলোর সঙ্গে পর্দার আড়ালে তারা কথা বলা শুরু করে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন এনডিএ জোটের শরিক অন্ধ্র প্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডু এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) জিতেছে ১৬ আসনে। অন্যদিকে নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) ১২ আসনে। ফলে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই।
বলাবলি হচ্ছে, কংগ্রেস বা ইন্ডিয়া জোট যদি তাদেরকে বাগে আনতে পারে তাহলে তারাও সরকার গঠন করতে পারে। এখানেই দরকষাকষির বড় একটি ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন এই দুই নেতা। তাই বলা হচ্ছে তারা দু’জন হলেন বিজেপি বা এনডিএ জোটের জন্য বাঁচামরা। অন্যকথায় বলা যায়, এবার ভারতে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তারা দু’জন কিংমেকার হয়ে উঠেছেন।  

বিজেপি এককভাবে ২৪০ আসনে জয় পেয়েছে। ফলে তারা দল হিসেবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। এ অবস্থায় তারা সরকার গঠন করলে মসৃণভাবে সরকার চালাতে হোঁচট খাবে। কারণ, পার্লামেন্টে গতবারের মতো তাদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে না। এ জন্য কোনো বিল পাস করতে গেলে শরিকদের মতামতের প্রাধান্য দিতে হবে। গত পার্লামেন্টে শুধু বিজেপি’র আসন ছিল ৩০৩টি। অর্থাৎ তারা ছিল একক সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে কোনো বিল তারা অন্য যেকোনো শরিক বা বিরোধীদের ওপর নির্ভর না করেই পাস করাতে পেরেছে। এবার ওই ২৩৯ আসনে জয় পাওয়ায় তা কঠিন হয়ে পড়বে তাদের জন্য। ফলে তাদের কাছেও চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতিশ কুমার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। এই দুই নেতার বাইরে আছে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা সিন্ডে গোষ্ঠী। তারা ৬ আসনে। বিহারে লোক জনশক্তি পার্টি ৫ আসনে। উত্তর প্রদেশে রাষ্ট্রীয় লোকদল ৩ আসনে। এর বাইরে আছে বেশ কিছু ছোট দল। তারা একটি বা একাধিক আসনে জিতেছে।

ভারতের লোকসভা নির্বাচন

ভারতের লোকসভা নির্বাচন


কে কত আসন পেল?

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ২৪০ আসন পেয়েছে বিজেপি। ৯৯ আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, শিবসেনা (উদ্ভব) নয়টি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) আটটি ও শিবসেনা (এসএইচএস) সাতটি আসনে জয় পেয়েছে।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিকদের প্রধান অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি ১৬টি এবং বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি–ইউ) ১২টি আসনে জয় পেয়েছে। এই দুই দল ছাড়া আরও একাধিক এনডিএ শরিকের ওপর নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। এদের মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্রের শিবসেনার সিন্ধে গোষ্ঠী, বিহারে লোক জনশক্তি পার্টি এবং উত্তর প্রদেশের রাষ্ট্রীয় লোক দল।

পাঁচটি আসন পেয়েছে লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস)। চারটি করে আসনে জয় পেয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট)- সিপিআই (এম), ওয়াইএসআরসিপি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। আম আদমি পার্টি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল) তিনটি করে আসন পেয়েছে।

কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট–লেনিনিস্ট) (লিবারেশন)–সিপিআই (এমএল) (এল), জনতা দল-জেডি (এস), জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (জেকেএন), রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি), জনসেনা পার্টি (জেএনপি) ও ভিসিকে দুটি করে আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি দল একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সাতজন।

এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে ৩০৩ আসনে জয় পেয়েছিল। সেবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ ৩৫২ আসনে জয় পায়। গত নির্বাচনে কংগ্রেস এককভাবে পেয়েছিল ৫২টি আসন। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন তৎকালীন ইউপিএ জোট পেয়েছিল ৯৪ আসন।

ভারতীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা

ভারতীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা


যেসব মন্ত্রী হেরেছেন

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ১৩ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হেরেছেন। হেরে যাওয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মধ্যে আছেন স্মৃতি ইরানি, অর্জুন মুন্ডা, অজয় মিশ্র টেনি, কৈলাস চৌধুরী প্রমুখ।

নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের আমেথি আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী কিশোরী লাল শর্মার কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কেন্দ্রীয় আদিবাসীবিষয়ক মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা ঝাড়খন্ডের খুন্তি আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী কালীচরণ মুন্ডার কাছে হেরেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি খেরি আসনে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী উৎকর্ষ ভার্মার কাছে হেরেছেন। রাজস্থানের বারমেরে হেরেছেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষককল্যাণ–বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কৈলাস চৌধুরী।

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর কাছে পরাজিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। কেন্দ্রীয় মৎস্য, পশুপালন ও দুগ্ধ উৎপাদন প্রতিমন্ত্রী এল মুরুগান বড় ব্যবধানে হেরেছেন ডিএমকের প্রার্থী এ রাজার কাছে। বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর কেরালার তিরুঅনন্তপুরম আসনে কংগ্রেসের শশী থারুরের কাছে হেরেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক কোচবিহার আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের জগদীশ চন্দ্র বসুনিয়ার কাছে হেরেছেন।

কেন্দ্রীয় মৎস্য চাষ, পশুপালন ও ডেয়ারি প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব কুমার বালিয়ান মুজাফফরনগর আসনে সমাজবাদী পার্টির হরেন্দ্র সিং মালিকের কাছে হেরেছেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের বাজিমাত

পশ্চিমবঙ্গে বাজিমাত করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দল এ রাজ্যে অভাবনীয় ফল করছে। এ রাজ্যে লোকসভার আসন আছে ৪২টি। তার মধ্যে ২৯টি আসনে জয় পেয়েছেন তার প্রার্থীরা। তীব্রভাবে এ রাজ্যকে আঁকড়ে ধরা বিজেপি জিতেছে ১২ আসনে। আগের লোকসভায় তৃণমূলের আসন ছিল ২২টি। বিজেপি’র ছিল ১৮টি। এবার বিজেপি’র আসন দৃশ্যত কমছে। অন্যদিকে তৃণমূলে জোয়ার লেগেছে। তাই তারা ভূমিধস বিজয় পেয়েছে।

রাজনীতিতে এসেই বাজিমাত করেছেন অভিনেত্রী, উপস্থাপিকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। জয় পেয়েছেন অভিনেতা দেব। ধরাশায়ী হয়েছেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেয়া শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপি’র সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এসব কারণে রাজ্য বিজেপিতে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই শুভেন্দু অধিকারীর ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন। কারণ, বিজেপি’র শীর্ষ নেতারা তার ওপর ভর করেছিলেন। তার পরামর্শেই প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়েছে। তাদের আসন বণ্টন করা হয়েছে। উপরন্তু এ রাজ্যকে বিজেপি টেস্ট কেস হিসেবে নিয়েছিল। এখানকার নির্বাচনী প্রচারণায় কার্যত সব শক্তি ব্যবহার করেছে বিজেপি। একাধিকবার নির্বাচনী প্রচারণায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রমুখ। তারা মমতার সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন।  

সমাজবাদী দলের প্রধান অখিলেশ যাদব

সমাজবাদী দলের প্রধান অখিলেশ যাদব


উত্তর প্রদেশে ধরাশায়ী বিজেপি, সমাজবাদী দলের চমক

বিজেপির ঘাঁটিখ্যাত উত্তর প্রদেশের নির্বাচনপূর্ব সমীক্ষা, বুথফেরত জরিপসহ সবক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে সব হিসাবনিকাশ উল্টে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের শরিক সমাজবাদী পার্টি চমক দেখিয়েছে। কংগ্রেসও গতবারের তুলনায় ভালো করেছে। সব মিলিয়ে যোগীরাজ্যে ধাক্কা খাচ্ছে বিজেপি।

উত্তর প্রদেশ রাজ্যে বর্তমানে ক্ষমতায় বিজেপি’র যোগী আদিত্যনাথ। এ রাজ্যে লোকসভার আসন রয়েছে ৮০টি, যা সব রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাই দেশের সার্বিক ফলে উত্তর প্রদেশের ফলের প্রভাব থাকে স্পষ্ট। ২০১৯ সালের নির্বাচনে এ রাজ্যের ৮০টি আসনের মধ্যে ৬২টি আসনে জিতেছিল বিজেপি।

তবে সর্বশেষ ফলাফলে দেখা গেছে, বিজেপি উত্তর প্রদেশে জিতেছে মাত্র ৩৬টি আসনে। অর্থাৎ গতবারের থেকে ২৬টি আসন হাতছাড়া হয়েছে পদ্মশিবিরের। সেখানে অখিলেশ যাদব নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টি জিতেছে ৩৬টি আসনে। কংগ্রেস ৭টি আসনে। এ রাজ্যে বিজেপির শরিক আরএলডি দুটি আসনে এগিয়ে।

২০১৯ সালে আমেথি আসনে হেরেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সেই আসনে জিতে মন্ত্রীও হয়েছিলেন বিজেপির স্মৃতি ইরানি। তবে এখন পর্যন্ত স্মৃতি পিছিয়ে রয়েছেন। কংগ্রেসের কিশোরী লাল এগিয়ে রয়েছেন গান্ধীদের ঘাঁটিখ্যাত আমেথিতে। এবার রাহুল দাঁড়িয়েছেন রায়বেরেলিতে। সেখানে ২ লাখের বেশি ভোটে এগিয়ে তিনি।

কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির অফিসে এখন উৎসবের মেজাজ। তাই এখন কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির এমন চমকের পেছনের রহস্য নিয়ে আলোচনা চলছে। লোকসভা নির্বাচনের মাস কয়েক আগে গত জানুয়ারিতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদি অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন ও বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন।

অযোধ্যায় রামমন্দির

অযোধ্যায় রামমন্দির


অযোধ্যার সেই আসনে হারল বিজেপি

নির্বাচনকে সামনে রেখে বছরের শুরুতে অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রামমন্দিরকে কেন্দ্র করে মোদি অযোধ্যা তো বটে সারা দেশেই ঝড় তুলবেন বলে সবাই আশা করেছিল; কিন্তু সবাইকে অবাক করে, অযোধ্যা লোকসভার সে আসনেই হেরে গেছে বিজেপি।

প্রাচীন স্থাপনা বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির যে স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে, অযোধ্যার সেই ফয়জাবাদে হেরে গেছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রার্থী। বিজয়ী হয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী অবধেশ প্রসাদ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন ও বিগ্রহে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন। অনুষ্ঠানটি ভারতের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল।

ভারতের লোকসভা নির্বাচন

ভারতের লোকসভা নির্বাচন


সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জিতলেন যাঁরা

ভোটের লড়াইয়ে ব্যক্তিগত চমক দেখিয়েছেন অনেক প্রার্থী। সবচেয়ে বেশী ভোটের ব্যবধানে যারা জিতেছেন তাদের তাঁদের মধ্যে সবার ওপরে রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের সংসদ সদস্য শংকর লালওয়ানি। বিজেপির এই প্রার্থী ১১ লাখ ৭২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন। এর মধ্য দিয়ে লোকসভা নির্বাচনে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।

রাকিবুল হুসেইন ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন আমাসের ধুবড়ি আসন থেকে। কংগ্রেসের এই প্রার্থী এবার জিতেছেন ১০ লাখ ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে।

তালিকায় এর পরে আছেন মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের নাম। বিজেপির এ নেতা জয় পেয়েছেন ৮ লাখ ২১ হাজার ভোটের ব্যবধানে। মধ্যপ্রদেশের ভিদিশা আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি।

গুজরাটের নাভসারি আসন থেকে বিজেপি নেতা সি আর পাতিলের ভোটের ব্যবধান ৭ লাখ ৭৩ হাজার।২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি ৬ লাখ ৮৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। এবার নিয়ে তৃতীয় দফায় সংসদ সদস্য হলেন পাতিল। ভোটের ব্যবধানে নিজের গড়া আগের রেকর্ড ভেঙেছেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অমিত শাহ ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন গুজরাটের গান্ধীনগর থেকে। জিতেছেন ৭ লাখ ৪৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে।

এ ছাড়া বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান চলাচলবিষয়ক মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া মধ্যপ্রদেশের গুনা আসন থেকে ৫ লাখ ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি


আগের তুলনায় কম ভোট পেয়েছেন মোদি

৬ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো উত্তর প্রদেশের বারণসি থেকে লোকসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই আসনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অজয় রায় (কংগ্রেস) পেয়েছেন চার লাখ ৬০ হাজার ৪৫৭ ভোট। অর্থাৎ মোদি মাত্র এক লাখ ৫২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন।

মোদি বারণসির এই আসনে মোট ভোটের ৫৪ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। অপরদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী অজয় রায় পেয়েছেন ৪০ দশমিক ৭৪ শতাংশ ভোট।

 নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পেলেও ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় তার ভোটের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী দলের সালিনী জাদবকে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০৫ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন। সেবার মোদি ভোট পেয়েছিলেন ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬৪টি। অপরদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সালিনী পেয়েছিলেন মাত্র ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৫৯ ভোট।

২০১৯ সালে মোদি মোট ভোটের ৬৩ দশমিক ৬২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। সেখানে এ বছর এটি ৫৪ দশমিক ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অপরদিকে ২০১৪ সালে মোদি পেয়েছিলেন ৫ লাখ ৮১ হাজার ২২ ভোট। যা মোট ভোটের প্রায় ৫৬ শতাংশ ছিল। সেই সময় তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পেয়েছিলেন দুই লাখ ৯ হাজার ২৩৮টি ভোট। ২০১৪ সালের নির্বাচনে মোদি কেজরিওয়ালকে হারিয়েছিলেন প্রায় ৪ লাখ ভোটের ব্যবধানে।

সূত্র: এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, হিন্দুস্তান টাইমস

দেশসংবাদ/এমএম/এমএইচ


আপনার মতামত দিন
নির্মাণাধীন ভবন ধসে ৩ জনের মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Tuesday, 22 October, 2024
কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ৬
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
Monday, 21 October, 2024
বাস-টেম্পু সংঘর্ষে একই পরিবারের ১২ জন নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Sunday, 20 October, 2024
দিল্লিতে স্কুলের কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Sunday, 20 October, 2024
ভারতের বিহারে বিষাক্ত মদপানে ৮ জনের মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Friday, 18 October, 2024
ভিসা কার্যক্রম নিয়ে নতুন করে যা জানাল ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Thursday, 17 October, 2024
আরো খবর
সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর >>
https://deshsangbad.com/ad/1699508455_1491666999_th.jpg
সর্বাধিক পঠিত
ফেসবুকে আমরা
সম্পাদক
এফ. হোসাইন
উপদেষ্টা সম্পাদক
ব্রি. জে. (অব.) আবদুস সবুর মিঞা
ঠিকানা
৮০২ ভিআইপি রোড, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
Developed & Maintenance by i2soft
যোগাযোগ
ফোন: +৮৮ ০২ ৪৮৩১১১০১-২
মোবাইল: +৮৮ ০১৭১৩ ৬০১৭২৯
ইমেইল: [email protected]
up