ঋণের তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার ছাড়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। শিগগিরি এই অর্থ বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংস্থাটির ঢাকা মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। আইএমএফের আর্থিক খাতের সংস্কারে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের নানা পদক্ষেপে সন্তুষ্ট হয়ে এমন আশার কথা জানিয়েছে ঢাকা সফররত মিশন।
বুধবার (০৮ মে) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন ক্রিস পাপাজর্জিও। তবে এসব সংস্কারের ফলে এ বছর মূল্যস্ফীতির কমবে না বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
মিশন শেষে আইএমএফ কর্মকর্তারা ঢাকা ছাড়ার আগেই ডলার দাম নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি ক্রলিং পেগ চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে এক লাফে টাকার মান কমেছে প্রায় ছয় শতাংশ। সুদহারও পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর আগে নানা রকম প্রতিশ্রুতি ও অগ্রগতি জানিয়েছে এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। সরকারের এমন উদ্যোগে তাই সন্তুষ্ট আইএমএফ।
ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানাই। জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণে নতুন ফর্মুলাসহ অনেক সংস্কারে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। বৈশ্বিক চাপ যদি বাড়ে, আরও সংস্কারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
তবে প্রশ্ন উঠছে, এত শর্ত পূরণ কিংবা সংস্কারে অর্থনীতিতে কী লাভ হচ্ছে? আইএমএফই বলছে, আপাতত তেমন স্বস্তি নেই। ডলারের দাম বাড়ায় পণ্যের দাম বাড়বে। এবছর মূল্যস্ফীতি থাকবে ৯ শতাংশের উপরে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি নামবে পাঁচ দশমিক চার শতাংশে। সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী বছর মূল্যস্ফীতি সাত দশমিক দুই শতাংশ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হবে দেশ।
ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হবে। এ বছর প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক চার শতাংশ। তবে আগামী বছর বাড়বে।
অর্থনীতিবিদদের অভিযোগ, অর্থপাচার, কর ফাঁকি, সরকারের অনুন্নয়ন ব্যয়সহ নানা ইস্যুতে নীরব আইএমএফ। এসব সমালোচনার জবাবও দেন কর্মকর্তারা।
ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, আইএমএফ অর্থপাচার ইস্যুতে নীরব নয়। অর্থপাচার ঠেকানো আমাদের মূলনীতির অংশ। কর ফাঁকি ও অর্থপাচার ঠেকাতে আমরা এনবিআর ও বিএফআইইউএর সঙ্গে কাজ করছি।
এর আগে আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থ প্রতিমন্ত্রীও জানান, ঋনের তৃতীয় কিস্তি পেতে কোনো সংশয় নেই। অর্থনীতির গতি বাড়াতে সংস্কার অব্যাহত থাকবে।