সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত আপাতত সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন।
সোমবার (০৬ মে) সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করা হবে। তবে আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর কোনও সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। আগামীতে বাড়াবো কী-বাড়াবো না, বাড়ালে ভালো হবে কিনা? এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। বিষয়টি আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে দেখবো, তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠি সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠি সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা নুন্যতম ৩৫ বছর করতে অনুরোধ জানিয়ে গত ১৭ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেনকে চিঠি দেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এতে তিনি লেখেন, ‘বিশ্বের প্রায় ১৬২ টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কমপক্ষে ৩৫ বছর, তার মধ্যে কিছু দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ হয়েও বিভিন্ন রাজ্যভেদে চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। ভারত সহ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো অনেক গবেষণা করেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে ন্যূনতম ৩৫ বছর করেছে। বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত যুবসমাজকে মানবসম্পদ হিসেবে কাজে লাগাতে পারলে সেটি হবে যুগোপযোগী ও যুগান্তকারী একটি সিদ্ধান্ত এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কয়েক ধাপ অগ্রসর হওয়া যাবে।
সংসদে দেয়া প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছরে সরকার অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চাকরিতে প্রবেশের বয়স ছিল ২৭ বছর সেখান থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সেটা ৩২ বছর করা হয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে। আমরা সবসময় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে জনবল কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করে থাকি। যুগের সাথে সম্পর্ক রেখে আমরা পরিবর্তনও করে থাকি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরি ঘিরে এখন বেশ আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত মেধাবীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদান করছেন। সরকারি চাকরির পরিবেশ থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো নতুন প্রজন্মের কাছে বড় আকর্ষণ তৈরি করেছে। সরকারের কাজের সাথে সম্পৃক্ততা একটি সম্মানের বিষয়। আবার চাকরির নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বেতন কাঠামো অত্যন্ত সুন্দর এবং কাজের পরিবেশও সুন্দর হয়েছে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, বয়স বাড়ানোর বিষয়টি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা সবসময় বলে আসছি, ফ্রেশ গ্রাজুয়েট যারা তাদের রিক্রুট করতে চাই। এটা সরকারের একটা পলিসি। আমরা বিসিএস-এর মাধ্যমে দেখে থাকি ২২-২৩ বছর বয়স থেকেই তারা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন। তারা ৬-৭ বছর সময় পেয়ে থাকেন। এজন্য তারা যোগদানের যথেষ্ট সময় পাচ্ছেন।
সরকারি দলের আরেক সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের অন্য একটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর বিষয়ে একটি পত্র আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সাথে আরও আলাপ-আলোচনা করবো।