টানা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন বন্ধের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে রুশ সেনা নিহত নিয়ে নতুন এক তথ্য দিয়েছে বিট্রিশ সংবাদমাধ্যম বিসিসি।
বুধবারের (১৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে এসে এরই মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে। এমনকি যুদ্ধে প্রথম বছরের তুলনায় দ্বিতীয় বছরে সম্মুখ সমরে নিহত রুশ সেনাদের সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি বলেও জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বিবিসি রাশিয়ান, স্বাধীন মিডিয়া গ্রুপ মিডিয়াজোনা এবং স্বেচ্ছাসেবীরা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রুশ সেনাদের মৃত্যুর সংখ্যা গণনা করছে। এছাড়া কবরস্থানে নতুন কবর অনেক সৈন্যের নাম প্রদান করতে সাহায্য করেছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
এছাড়া বিবিসি দলগুলো সেনা হতাহতের অফিসিয়াল রিপোর্ট, সংবাদপত্র এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মতো ওপেন সোর্স তথ্যের মাধ্যমেও অনুসন্ধান চালিয়েছে।
বিবিসি বলছে, তাদের অনুসন্ধান অনুসারে ইউক্রেন যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে ২৭ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি রাশিয়ান সৈন্য নিহত হয়েছেন। ঠিক কী বিশাল সংখ্যক জীবনের বিনিময়ে রাশিয়া ভূখণ্ড দখল বা আঞ্চলিক অগ্রগতি লাভ করেছে তার প্রতিফলন এই সংখ্যার মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে।
রাশিয়া অবশ্য সেনা নিহতের সংখ্যা বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
বিবিসি বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাদের সামগ্রিক মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৫০ হাজারেরও বেশি। এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেনা মৃত্যুর বিষয়ে সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল মস্কো। আর তাদের সেই প্রকাশ্য স্বীকৃতির পরিসংখ্যানের চেয়ে সেনা নিহতের বর্তমান সংখ্যা আট গুণেরও বেশি।
যদিও ইউক্রেনে রাশিয়ান সেনাদের মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
বিবিসির এই বিশ্লেষণে পূর্ব ইউক্রেনে - রুশ-অধিকৃত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কে মিলিশিয়া যোদ্ধাদের মৃত্যুর সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এগুলো যুক্ত করা হলে রাশিয়ার পক্ষে লড়াইরত সেনাদের মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে।
এদিকে ইউক্রেন তার যুদ্ধক্ষেত্রের প্রাণহানির মাত্রা নিয়ে খুব কমই মন্তব্য করে থাকে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য নিহত হয়েছে।
তবে মার্কিন গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যেসব পরিসংখ্যান পাওয়া যায়, তাতে ইউক্রেনীয় বাহিনী আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়।