বান্দরবানের রুমায় যৌথবাহিনীর দিনভর অভিযানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৪৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (০৮ এপ্রিল) অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় ৩১ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারীকে গ্রেপ্তারসহ ৭টি দেশীয় বন্দুক, ২০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিকেলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছিল, অভিযানে কেএনএফের দুই সক্রিয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তবে আটকদের নাম জানা যায়নি।
আর সকালে থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়ি জব্দের কথা জানিয়েছিল পুলিশ। বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন সে সময় জানান, ওই গাড়ির চালক ও কেএনএফের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এরা হলেন, গাড়িচালক মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন সাগর, কেএনএফ সদস্য ভানুনুন নুয়ান বম, জেমিনিউ বম এবং আমে লানচেও বম।
এর আগে, গত সোমবার কেএনএফের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক চেওশিম বমকে বান্দরবানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করার তথ্য জানায় র্যাব–১৫।
গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে ৮টি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে রুমা বাজার থেকে উদ্ধার করে র্যাব। এর পরপরই থানচি থানা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই গোলাগুলি চলে।
স্থানীয়রা বলছেন, থানচি থানার পাশে প্রথম গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে তা থানচি বাজারের কাছে চলে আসে। এ সময় কেএনএফ সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময় হয়। পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে তারা প্রায় ৫০০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে।
এর রেশ কাটতে না কাটতেই মধ্যরাতে আলীকদমের ২৬ মাইল ডিম পাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর চেক পোস্টে হামলা হয়। সবগুলো ঘটনার সঙ্গেই কেএনএফ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী।