Published : Saturday, 6 April, 2024 at 4:03 PM, Update: 06.04.2024 4:08:50 PM
চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন রোজাদাররা। গরম ও রোদের তাপের কারণে হাঁসফাঁস অবস্থা। কৃষক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশাচালকরা গরমে অস্থির হয়ে পড়েছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে।
শনিবার (৬ এপ্রিল) বেলা ৩টার দিকে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বাতাসের আদ্রর্তা ২২ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান তাপমাত্রা রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রোদের প্রখরতা ও তীব্র গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়েছে। বেশি সমস্যায় পড়েছেন নিম্ন শ্রেণির খেটেখাওয়া মানুষ। তারা এ ভ্যাপসা গরমে কাজ করতে পারছেন না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সূর্যের প্রখরতা ও ভ্যাপসা গরম। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ খুব একটা বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে দুপুরের পর থেকে সড়কগুলো এক প্রকার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়ার গ্রামের ইজিবাইক চালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সামনে আর কদিন বাদে ঈদ। প্রচন্ড গরমেও গাড়ি চালাচ্ছি। কিন্ত রাস্তায় যাত্রী কম। এ জন্য ভাড়া হচ্ছে না।
এদিকে, তাপপ্রবাহের কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান পরামর্শ দিয়ে বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্টোকের ঝুঁকি থাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রোজাদারদের সন্ধ্যার পর থেকে বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। শিশু-কিশোর ও যারা রোজায় থাকছেন না তাদেরকে ঘন ঘন পানি ও শরবত পান করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
অপরদিকে, চলমান তাপ প্রবাহের কারণে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা, ধানের শিষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি রাখতে হবে। আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করা; প্রয়োজনে গাছের শাখাপ্রশাখায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। সবজি ক্ষেতে মাটির ধরন বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ২ থেকে ৩টি সেচের ব্যবস্থা করা।
জেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা জানান, অতিরিক্ত গরমে মাঠে কৃষি কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। রোজায় তারা দিনে বেশি কাজ করতে পারছেন না।
শহরে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, আর কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। বেচাকেনা জমে উঠলেও অতিরিক্ত গরমের কারণে দুপুর ১২টা পর থেকে বিকেল পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে লোকজনের আনাগোনা খুবই সীমিত।
গত বছরের চেয়ে এপ্রিলের প্রথম ৫ দিনে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণও রয়েছে বেশি। দুপুর ১২টায় আর্দ্রতা ছিল ৫৮ শতাংশ। এরপরই রাজশাহীতে রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঈদের আগে বরিশালে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।