সাগর শান্ত হলে আগামী সপ্তাহে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের ১৮০ সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠাতে উদ্দ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সাগর যেহতু অশান্ত সে কারণেই তাদেরকে ফেরত নেয়া সম্ভব হয়নি। আমরা আশা করেছিলাম, এ সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে ফেরত পাঠাতে পারব। তবে এ সপ্তাহে হচ্ছে না। সমুদ্র যদি শান্ত হয় তাহলে আগামী সপ্তাহ কিংবা সহসা তাদেরকে ফেরত পাঠাতে পারব।
গত ১১ মার্চ বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মির সাথে সংঘাতে টিকতে না পেরে দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় বিজিপির ১৭৯ সদস্য। বিজিপির এই সদস্যরা বর্তমানে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) হেফাজতে আছেন। থাইল্যান্ড ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি বলছে, বিজিপি সদস্যদের মধ্যে অন্তত একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
আশ্রয় নেয়া বিজিপিদের বিনিময়ে বাংলাদেশি বন্দি মুক্তি দেবে মিয়ানমার আশ্রয় নেয়া বিজিপিদের বিনিময়ে বাংলাদেশি বন্দি মুক্তি দেবে মিয়ানমার
এরআগেও বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছিল মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), সেনা সদস্যসহ বিভিন্ন বিভাগের ৩৩০ কর্মকর্তা। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুই ধাপে সমুদ্রপথে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
এছাড়াও মিয়ানমারে আটকে পড়া ১৭০ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান। তিনি জানান, তাদের ফেরতের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে মিয়ানমার সরকার।
ইরাবতির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলমান সংঘাতের কারণে রাখাইন রাজ্যসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা কারাগারগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা জান্তা সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় তারা বাংলাদেশি কারাবন্দিদের ফেরত পাঠাতে চায়। ধারণা করা হচ্ছে যে জাহাজে করে কক্সবাজার থেকে বিজিপি সদস্যদের ফেরত নেয়া হবে সেই জাহাজেই বাংলাদেশি বন্দিদের নিয়ে আসা হবে।
গত বছরের ১৩ নভেম্বরের পর এখন পর্যন্ত রাখাইন এবং চীন রাজ্যের পালেতওয়া শহরে জান্তার ১৭০টি অবস্থানের পতন ঘটিয়েছে আরাকান আর্মি। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তর রয়েছে। পালেতওয়া এবং রাখাইনের ১৭টির মধ্যে ৬টি শহরের পূর্ন দখল এখন আরাকান আর্মির।
সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহীদের এ সংঘর্ষের রেশ দেখা গেছে বাংলাদেশ সীমান্তেও। মিয়ানমার থেকে আসা গোলার আঘাতে একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দিনভর সংঘর্ষ, আর ওপার থেকে ভেসে আসা তীব্র গোলা–বারুদের শব্দে আতঙ্ক কাটছে না মিয়ানমার সীমান্তে থাকা বাংলাদেশি জনপদগুলোতে।