গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুনে দগ্ধদের মধ্যে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এই অগ্নিদুর্ঘটনায় দগ্ধ দুজন মারা গেলেন। ৪৫ বছর বয়সী মনসুর নামের ওই ব্যক্তির শরীর শতভাগ পুড়ে গিয়েছিল।
শনিবার ( ১৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় মনসুর মারা যান বলে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসক মৃদুল সরকার জানান।
এই চিকিৎসক বলেন, মনসুরের শরীর শতভাগ দগ্ধ হয়েছিল, পুড়ে গিয়েছিল শ্বাসনালীও। তিনি আমাদের পোস্ট অপারেটিভ ইউনিটে ভর্তি ছিলেন।
কালিয়াকৈরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি ৩২ জনের মধ্যে এই নিয়ে দুজনের মৃত্যু হল। এছাড়া একজন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
শুক্রবার মারা যাওয়া সোলাইমান মোল্লার (৪৫) শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
এর আগে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও আইসিইউ কনসালটেন্ট একরামুল হক সজল বলেছিলেন, আইসিইউতে যারা আছেন তাদের কারও অবস্থাই ভালো না।
তাদের সবার অবস্থাই খুব খারাপ। তাদের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। তারমধ্যে আবার ৮০ শতাংশ, ৯০ শতাংশ এমনকি ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই এদের কামব্যাক করার সুযোগ কম।
বুধবার সন্ধ্যায় ইফতারের আগে আগে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলিরচালা এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, যে বাসায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে গ্যাস বের হতে থাকা গরম সিলিন্ডার ভেজা চট দিয়ে মুড়িয়ে বাইরে রেখে যান পরিবারের কেউ একজন। স্থানীয়দের অনেকে কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে এসেছিলেন কী হচ্ছে সেটা দেখতে। সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরিয়ে যে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, তা বুঝতে পারেনি কেউ।
সে সময় পাশের আরেকটি বাসায় চুলা ধরাতে গেলে পুরো রাস্তায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তাতেই দগ্ধ হয় সবাই।
ওই ঘটনার পর মারাত্মকভাবে দগ্ধ ৩২ জনকে রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
রোগীদের প্রায় সবার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।