শিরোনাম: |
নিম্ন তাপমাত্রা ও কুয়াশা-যুক্ত আবহাওয়ার কারণে এসব ফসল বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। তাই কৃষি কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে এসব ফসল রক্ষায় বাড়তি যত্ন ও ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জে সিরাজদিখান উপজেলার কৃষক মো. বিল্লাল হোসেন মোল্লা পাঁচ একর জমিতে আলু, বেগুন, সরিষা, লাল শাক, চিয়া সিডসহ শীতের বিভিন্ন সবজি চাষ করেছেন। তিনি জানান, কিছুদিন আগে বৃষ্টিতে আলুর বেশ ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার তীব্র শীতের কারণে ফসল নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন রয়েছেন।
সারা দেশ-ব্যাপী নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে মে মাস পর্যন্ত বোরো ধানের মৌসুম চলে। এ সময় বীজতলায় বীজ বপন করা হয়। ধানের বয়স ৪০ দিন বা ৪৫ দিন হলে চারা তুলে মাঠে রোপণ করা হয়।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোসাম্মৎ সালমা পারভীন বিবিসি বাংলাকে বলেন, সপ্তাহব্যাপী তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে বীজতলায় থাকা চারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রির নিচে চলে গেলে ধানের চারাগাছ হলুদ হয়ে যেতে পারে, তখন তা খাদ্য তৈরি করতে পারবে না। চারা মরে যেতে পারে। চারা যাতে মরে না যায় সেজন্য স্বচ্ছ সাদা পলিথিন দিয়ে বাঁশের মাচার মতো তৈরি করে বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ফারুক বিন হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, রাতের তাপমাত্রা যখন ২০ ডিগ্রির নিচে চলে আসে ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার জন্য আর্দ্রতা ৮০ বা ৯০ পারসেন্ট হয়ে যায় তখন শীতকালীন ফসলে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ হয়। এ সময় মূলত আলু, ডাল ও তেল জাতীয় ফসল চাষ হয়। ঠাণ্ডা ও ভেজা আবহাওয়া এসব ফসলে রোগ বিস্তারের জন্য অনুকূল। তাই ফসল রক্ষায় বাড়তি সতর্কতা নিতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়, জানান মি. হোসেন।
এই তীব্র শীতে আলুতে ব্যাপক হারে মড়ক রোগের আক্রমণ হয়। কুয়াশা-যুক্ত আবহাওয়ায় মড়ক রোগে আক্রান্ত আলু গাছ দ্রুত লতাপাতা ও কাণ্ডসহ পচে যায়। দুই-তিনদিনের মধ্যেই মাঠের সমস্ত গাছই মরে যেতে পারে। এছাড়া তাপমাত্রা আরো নেমে গেলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় মসুর ডাল। গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয়। তাই রোগের আক্রমণ এড়াতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, নতুবা ব্যাপক ফসল-হানি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, বলছেন মি. হোসেন।
বগুড়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. মতলুবার রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, এ রকম আবহাওয়ায় আলুর মড়ক রোগ এড়াতে কৃষকদের প্রতি লিটার পানিতে তিন গ্রাম হারে ম্যানকোজেব ছত্রাক-নাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি।
এছাড়া যেসব আলুর বয়স ৬০ দিনের উপরে, সেগুলোর জন্য আলাদা পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এছাড়া মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটাসহ শীতকালীন সবজি এখনো মাঠে রয়েছে। তবে এগুলো সেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না বলে জানান তিনি।
দেশসংবাদ/এমএইচ/এফএইচ
আপনার মতামত দিন
|