পদ্মা নদীর কোল ঘেঁষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার একটি গ্রাম চর জগন্নাথপুর। এবার বিস্তীর্ণ চরের মাঠজুড়ে প্রায় ৩২৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। শুধু চর জগন্নাথপুর গ্রামই নয়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে এবার সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকেরা। তবে সপ্তাহখানেক আগে অসময়ের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ঝরে গেছে সরিষা ফুল। ফলে গাছ ভালো হলেও ফলন কম হওয়ার শঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাজারে তৈলজাত পণ্যের দাম বেশি এবং অল্প সময় ও কম খরচে ফলন বেশি হওয়ায় এবার উপজেলায় ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৫০০ হেক্টর বেশি। এ বছর বিনা সরিষা-৪, ৯, ১৪ ও ১৭ জাতের আবাদ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় টন সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি বছরে প্রায় ৪ হাজার ৯৭০ জন কৃষককে প্রণোদনার বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ৩৩ শতক জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। গাছ ও ফুল খুব ভালো হয়েছে। গত বছর প্রতি বিঘায় ছয় থেকে সাড়ে ৭ মণ করে সরিষা উৎপাদন হয়েছিল। তবে বৃষ্টির কারণে এবার ফলন কিছুটা কম হবে বলে ধারণা করছি।
উম্বাদ আলী নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘বাজারে দাম বেশি, ফলন ভালো ও কম সময়ে ফসল ঘরে তোলা যায় বলে সরিষা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। আমি প্রায় ৪ বিঘা জমিতে বিনা সরিষা-১৪ আবাদ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘায় ৬ মণ করে ফলন পাব।’
যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, গেল বছর বৃষ্টিপাত ও পোকার আক্রমণে সরিষা নষ্ট হয়েছিল। এবার এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। সরিষার গাছও ভালো হয়েছে। কৃষকেরা ভালোভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারলে লাভবান হবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, ‘এবার প্রায় ৪ হাজার ১২৮ টন সরিষা আবাদের প্রত্যাশা করছি। তবে বৃষ্টির কারণে ফলন কিছুটা কম হতে পারে।